দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ ৩০ ডিসেম্বর সাগরের হেলিপ্যাডে দাঁড়িয়ে যা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ৮ জানুয়ারি দুপুরে ডায়মন্ড হারবার লোকসভার কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকের পর আলিপুরে দাঁড়িয়ে ঠিক তার উল্টো কথা বললেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাগরের প্রশাসনি বৈঠক সেরে কলকাতায় ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে বড় দিনে পার্ক স্ট্রিটের শঙ্কা জাগানো ভিড় হয়ে গিয়েছে। পরের দিনই বর্ষবরণের রাত। একটার পর একটা রাজ্য থার্টি ফার্স্ট এর পার্টি, জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছে। বাংলা কোন পথে হাঁটবে সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “নতুন বছরকে আমি আটকাব কী করে? কে কী উৎসব করবে সেটা আমি ঠিক করে দিতে পারি?”
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল, অন্যান্য রাজ্য যখন বিধিনিষেধের পথে হাঁটছে তখন পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও পরিকল্পনা করছে কি না। জবাবে সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা নেগেটিভ খেলবেন না। অযথা আতঙ্ক ছড়াবেন না। এর আগে কোভিডের দুটি ঢেউয়ের সময়ে সংবাদমাধ্যম যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিল, আশা করব এবারও আপনারা তাই করবেন।”
এদিন কোভিড নিয়ন্ত্রণেই নিজের সংসদ এলাকায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন। তারপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন, “বড় দিন, দুর্গাপুজো, আর যা যা উৎসব আছে সব পরে হবে। আগে মানুষের জীবন। মানুষ যদি না বাঁচেন তাহলে উৎসবের আর কী থাকবে!”অনেকের মতে, বড় দিনে পার্ক স্ট্রিটে যে শিউরে ওঠার মতো ভিড় হয়েছিল, অভিষেক হয়তো সেটাকেই স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেন এদিন। গঙ্গাসাগর প্রশ্নেও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেন , হাইকোর্ট যে বিধি বেঁধে দিয়েছে আমাদের সকলের উচিত তা মেনে চলা।
তবে অভিষেক বারবার বলেছেন, এটা তাঁর ব্যক্তিগত মত। অনেকের মতে, নিজের ব্যক্তিগত মত কী তা স্পষ্ট করে দিয়ে অভিষেক যেন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, ক্রিসমাস থেকে বর্ষবরণ—কোভিডের বাড়বাড়ন্তের সময়ে লাগাম না টানার সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে একমত নন। অর্থাৎ তিনি মনে করেন, সরকার তথা প্রশাসনের আরও কঠোর হাতে মোকাবিলা করা উচিত ছিল।পর্যবেক্ষকদের অনেকেই বলছেন, পরোক্ষে যেন অভিষেক বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, কোভিড নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকারের যে ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল তা নেওয়া হয়নি। এবং এদিন ডায়মন্ড হারবারে একাধিক বিধি জারি করে নিজের সাংসদ এলাকাকে মডেল হিসেবে তুলে ধরতে চাইলেন। এদিন অভিষেক এও বলেন, ডায়মন্ড হারবারে কোভিড সংক্রমণের রেখচিত্র নিম্নমুখী। তাও আগামী ২ মাস তিনি রাজনৈতিক, ধর্মীয় জমায়েত তিনি চান না।