দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ হিঙ্গলগঞ্জে এক উপপ্রধানকে খুনের অভিযোগে তিন জনকে গণধোলাই দিল গ্রামের লোকজন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। যদিও প্রহৃত যুবকদের বাড়ির লোক পাল্টা অভিযোগ করেছেন উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। তাঁরা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই তিন যুবককে গণধোলাই দেওয়া হয়েছে।
বাড়ি থেকে ত্রাণ দেওয়ার জন্য বেরোতেই বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ থানা এলাকার স্যান্ডেল বিলগ্রামের উপপ্রধানের উপরে হামলা করার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে দুই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। উপপ্রধানের বক্তব্য অনুযায়ী, স্যান্ডেল বিলগ্রামের ভেটকিয়ায় আজ শুক্রবার সকাল আটটা নাগাদ সান্ডেল বিলগ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়নাল আবেদিন গাজি ত্রাণ বণ্টন করার জন্য বাড়ি থেকে বেরোন। সেই সময় মোটরসাইকেলে চেপে দুই সশস্ত্র দুষ্কৃতী তাঁর ওপর হামলা করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়। চলে গণধোলাই।
লকডাউনের জেরে গ্রামবাসীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ বিলি করছিলেন জয়নাল আবেদিন গাজি। তখনই নাকি মোটরসাইকেলে করে দুই সশস্ত্র দুষ্কৃতী তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা ওই দুই দুষ্কৃতীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তাদের বেধড়ক মারধর করতে শুরু করেন গ্রামের লোকজন। তাদের মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করেন। হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে দুই অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠেছে গণপ্রহারে তিনজনের আহত হওয়া নিয়ে।
উপপ্রধানের বিরুদ্ধে আক্রান্ত যুবকের পরিবারের পাল্টা অভিযোগ, আবেদিন গাজি ও তার দলবল পরিকল্পিত ভাবে বাড়িতে ডেকে এনে সৈয়দ গাজি নামে একজনকে বেধড়ক মারধর করে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। বাকি দু’জনকে গাছে বেঁধে রাখে। মোট তিন জনকে তারা মারধর করেছে। তাঁদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ১৯ জুন বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই উপপ্রধানকেই রাতের অন্ধকারে ঘরের মধ্যে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁকে না পেয়ে তাঁর মাকে গুলি করা হয়েছিল। সেই ঘটনা লোকে এখনও ভোলেননি। সব মিলিয়ে আজকের এই ঘটনার সঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের আগের সেই ঘটনার কোনও যোগসূত্র আছে কিনা পুলিশ সেব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশ পাঁচ জনকে আটক করেছে।
ধৃত দুষ্কৃতীদের নাম আশরাফ গাজি ও নুরুল ইসলাম সরদার। তাদের বাড়ি পাশের গ্রাম বাঁকড়ায়। কেন এই ভাবে তারা বেপরোয়া ভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে উপপ্রধানের উপরে হামলা করল তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এর পিছনে রাজনৈতিক কারণ আছে নাকি পুরনো শত্রুতার জেরে এই কাণ্ড নাকি ক্ষমতা দখলের লড়াই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।