দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাথরাসে দলিত তরুণীকে অত্যাচার করে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন চারজন। তাঁদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত সন্দীপ ঠাকুর পুলিশকে চিঠি লিখে ন্যায়বিচার চাইলেন। সন্দীপের দাবি, ওই তরুণীর ওপরে তার মা ও ভাই অত্যাচার চালিয়েছিল। সম্প্রতি পুলিশও দাবি করেছে, মৃতের ভাই অভিযুক্তদের অন্তত একজনকে চিনত। তারপরেই সন্দীপ ঠাকুরের ওই চিঠির কথা জানা যায়।
হাথরাস পুলিশকে চিঠি লিখে সন্দীপ দাবি করেন, মৃত তরুণী তাঁর বন্ধু ছিল। মাঝে মাঝে তার সঙ্গে সন্দীপের দেখা হত। ফোনেও দু’জনের কথাবার্তা হত। চিঠিটি লেখা হয়েছে হিন্দিতে। তাতে অভিযুক্ত চারজনেরই টিপসই আছে।
পুলিশের দাবি, মোবাইলের কল রেকর্ড থেকে জানা যায়, মৃত তরুণীর ভাইয়ের সঙ্গে সন্দীপ ঠাকুরের যোগাযোগ ছিল। গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত দু’জনের মধ্যে ১০৪ বার কথা হয়েছে। চিঠিতে সন্দীপ ঠাকুর অভিযোগ করেছেন, মৃত তরুণীর পরিবার তাঁদের বন্ধুত্ব পছন্দ করেনি। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “ঘটনার দিন আমি মাঠে মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। তার মা ও ভাই সেখানে উপস্থিত ছিল। মেয়েটি আমাকে চলে যেতে বলে। তখন আমি মাঠ থেকে ফিরে আসি।”
সন্দীপের দাবি, তিনি গ্রামবাসীদের কাছে শুনতে পান, মেয়েটির মা ও ভাই তাকে মারছে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, “মাঠ থেকে ফিরে আসার পরে গ্রামবাসীদের কাছে আমি শুনতে পাই, মেয়েটির মা ও ভাই তাকে মারছে। সে গুরুতর আহত হয়েছে। আমি কখনই মেয়েটিকে মারিনি। তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করিনি। মৃতের মা ও ভাই মিথ্যা অভিযোগে আমাদের তিনজনকে ফাঁসিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সত্যিটা প্রকাশ পাবে।”
সন্দীপরা রয়েছেন আলিগড় জেলে। সেখানকার এক উচ্চপদস্থ অফিসার জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় অভিযুক্তরা হাথরাসের পুলিশ সুপারকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। নিয়মমতো আমরা চিঠিটি সুপারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন তদন্ত চলছে।
মৃতের বাবা সন্দীপের কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি মেয়েকে হারিয়েছি। এখন তারা আমাদের বদনাম করতে চাইছে। আমরা আতঙ্কিত। তাদের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। আমি কোনও ক্ষতিপূরণ চাই না। আমি চাই ন্যায়বিচার।”
অভিযোগ, গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত তরুণীকে চার উচ্চবর্ণের ব্যক্তি ধর্ষণ করে। ধর্ষিতার পরিবারের দাবি, তাঁরা দলিত হওয়ার জন্যই পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছিল। গণধর্ষণের পরে তরুণীর ওপরে বীভৎস অত্যাচার করে অপরাধীরা। তাঁর শরীরে নানা জায়গায় হাড় ভেঙে যায়। সারা শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়।
ঘাড়ে গভীর ক্ষত থাকার জন্য তাঁর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। পুলিশ জানায়, তরুণীর জিভেও ক্ষত ছিল। চার অপরাধী যখন তাঁকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি নিজের জিভ কামড়ে ফেলেন।
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জোর করে তাঁর দেহ আত্মীয়দের থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। পরিবারকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী মিলে রাত আড়াইটেয় তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দেন।