দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই নজিরবিহীন ঘটনা। বাজেট অধিবেশনের সূচনার দিনই উত্তাল হয়ে উঠল বিধানসভা। প্রথমে বিজেপির স্লোগান, ‘ভারত মাতা কি জয়।’ তারপর তৃণমূলের পাল্টা স্লোগান জয় বাংলা। আর এসবের মাঝে মাত্র চার মিনিটে ভাষণ থামিয়ে দিয়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে গেলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
আজ বিধানসভায় রাজ্যপাল যে বক্তব্যটি পড়ছিলেন তার খসড়া তৈরি রাজ্য সরকারেরই। এ নিয়ে দিন তিনেক আগে ব্যাপক টানাপোড়েন হয়। সরকারের লেখা এবং মন্ত্রিসভার অনুমোদন করা স্পিচ পড়তে অসম্মত হন ধনখড়। দু’ তিন লাইন বদলানোর নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজভবনে তলব করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, রাজ্য সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই স্পিচই পড়তে হবে রাজ্যপালকে।
আজ বক্তৃতা শুরু হতেই নির্বাচন পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গ তুলে তুমুল হইচই শুরু করেন শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি বিধায়করা। হিংসায় আক্রান্তদের ছবি তুলে ধরে বিক্ষোভ শুরু হয়। এ বছর কোভিডের কারণে অধিবেশন কক্ষে ক্যামেরা ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ফলে রাজ্যপালের বক্তৃতার লাইভ সম্প্রচার দেখানো যায়নি।
রাজ্যপাল হাউসে প্রবেশ করতেই ওয়েলে নেমে তাঁর উদ্দেশে নমস্কার জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপরই হাতে ভোট পরবর্তী হিংসার ছবি নিয়ে ওয়েলে নেমে তুমুল স্লোগান শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। রাজ্যপাল তখন সবে বলা শুরু করেছেন। কিন্তু তাঁর বক্তৃতা ঢাকা পড়ে যাচ্ছিল গেরুয়া বিধায়কদের স্লোগানে।
এরপরই ভাষণ থামিয়ে দেন রাজ্যপাল। সকলের উদ্দেশে নমস্কার জানিয়ে বেরিয়ে যান বিধানসভা থেকে। বিজেপি যখন স্লোগান দিচ্ছিল ট্রেজারি বেঞ্চে বসা তৃণমূল বিধায়করা চুপ করেই ছিলেন। রাজ্যপাল বেরিয়ে যাওয়ার মুখেই পাল্টা স্লোগান শুরু করেন শাসকদলের বিধায়করা। ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে ওঠে পাল্টা স্লোগান।
রাজ্যপাল কক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই বিজেপি বিধায়করা অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যান। তখন বিরোধী বলতে ভিতরে শুধু সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি।
এরপর রাজ্যপালকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে কক্ষে ফিরে আসেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তারপর মুখ্যমন্ত্রীও বেশিক্ষণ কক্ষে ছিলেন না। তিনিও বেরিয়ে যান।
তবে বেরিয়ে যাওয়ার আগে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী কয়েক সেকেন্ড কথা বলছেন মুকুল রায়ের সঙ্গে। মুকুলবাবু এদিন অধিবেশনে বিজেপির আসনেই বসেছেন। অনেকের মতে, পিএসি চেয়ারম্যান নিয়ে সংঘাতের আবহে মুখ্যমন্ত্রী যেদিন বলেছিলেন মুকুল তো বিজেপি পার্টিরই মেম্বার সেদিনই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এদিন হলও তাই।