দেশের সময় ,বনগাঁ: বনগাঁয় কলকাতার ধাচে একটি বিনোদন পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল বনগাঁ পৌরসভা। সেই পার্কের প্রাথমিক কাজ শুরু হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে প্রবল বাধার সম্মুখীন হল। আর তার ফলে আপাতত বন্ধ হয়ে গেল সে কাজ। এই নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।
বনগাঁ পৌরসভার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত চাঁপাবেড়িয়া এলাকায় এই পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল বছর খানেক আগে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ এখানে দীর্ঘদিনের একটি পুরনো পুকুর ছিল। যে পুকুরে এলাকার মহিলারা স্নান করা থেকে শুরু করে অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ সারতেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কাজে লাগতো অথচ সেই পুকুর পার্ক নির্মাণের স্বার্থে অবৈধ ভাবে বুজিয়ে দেওয়া হয়।
এলাকার একটি শতাধিক বছরের প্রাচীন রাস্তা ছিল যে রাস্তা এলাকার মানুষের একমাত্র যাতায়াতের ব্যবস্থা হিসেবে চালু ছিল, সে রাস্তাটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সে রাস্তার পরিবর্তে অন্য পাশ দিয়ে এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত জায়গার উপর দিয়ে জোর করে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করা হয়। এর পাশাপাশি স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখল করে পার্কিং এলাকা করার জন্য দখল করে নেওয়া হয় ।
সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে ফলাফল অন্যরকম হওয়ায় বনগাঁর বিভিন্ন এলাকার মানুষ পুরসভা তথা কিছু কিছু তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। চাপাবেড়িয়ার এই ঘটনা তারই একটি নমুনা। স্থানীয় মহিলাদের অভিযোগ, পৌর প্রধান নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে জোর করে ওই এলাকায় বিনোদন পার্ক তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই পার্ক তৈরি করতে গিয়ে এলাকার বহু প্রাচীন গাছ কেটে সবুজ ধ্বংস করা হয়েছে। – দেখুন লাইভ ভিডিও..
এইসব ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে দিন দুই আগে এলাকার মহিলারা পার্ক নির্মাণের কাজ বন্ধ করে পুলিশের দ্বারস্থ হন। এই বিষয় নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে পুলিশের উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় । এরপর আজ, মঙ্গলবার স্থানীয় মানুষ নতুন করে বিনোদন পার্ক এর জন্য প্রস্তাবিত জমির বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে মহকুমা শাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
সেখানেও তারা বুজিয়ে দেওয়া পুকুর ফিরিয়ে দেওয়া, রাস্তা ফিরিয়ে দেওয়া এবং স্কুলের জায়গা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ পুর কর্তৃপক্ষ স্থানীয় মানুষের সাথে কোন কিছু আলোচনা না করে এক প্রকার জোর করে এই পার্ক নির্মাণ করছে। যদিও বনগাঁ পৌরসভার প্রধান শঙ্কর আঢ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পার্ক নির্মাণের কাজে হাত দেওয়ার আগে এলাকার মানুষ, স্থানীয় ক্লাবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করে তাদের সম্মতি নিয়েই প্রকল্পটির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে।
এখন রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপির কিছু নেতার ইন্ধনে এলাকার মানুষ পরিকল্পিতভাবে পুরসভার বিরুদ্ধে গিয়ে উন্নয়নমূলক কাজে বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তিনি জোরের সঙ্গেই বলেন, এইরকম বাধার কাছে মাথা নত করবে না পৌরসভা। মানুষের স্বার্থে উন্নয়নের কাজ চলবে।