দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আগে স্থির হয়েছিল, ৩ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে। রবিবারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, সরকার তার আগেই কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদেরও একটি শর্ত মানতে হবে। তাঁদের সকলকে চলে যেতে হবে বুরারিতে। আন্দোলনকারীরা সেই শর্ত মানতে অস্বীকার করেন। অবশেষে মঙ্গলবার কোনও শর্ত ছাড়াই কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছে সরকার।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র তোমর জানিয়েছেন, প্রবল শীত ও করোনা অতিমহামারীর কথা মাথায় রেখে কৃষকদের আগেই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও পূর্বশর্ত আরোপ করা হয়নি। ইতিমধ্যে রোজ হরিয়ানা সীমান্ত পেরিয়ে শ’য়ে শ’য়ে কৃষক রাজধানীতে আসছেন। কৃষক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, গুরুপরবের জন্য অনেকে এতদিন আসতে পারেননি। এবার তাঁরা আসবেন। সেক্ষেত্রে রাজধানীতে আরও ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সোমবার কৃষক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, তাঁরা দিল্লিতে আসা-যাওয়ার পাঁচটি রাস্তা বন্ধ করে দেবে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে নরেন্দ্র তোমরের সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় দু’বার বৈঠকে বসেছেন অমিত শাহ।
কৃষিমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ১৩ নভেম্বর আমরা ঘোষণা করেছিলাম, ৩ ডিসেম্বর কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। কিন্তু তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েই চলেছেন। শীত ও করোনা সংক্রমণের কথা চিন্তা করে তাঁদের ১ ডিসেম্বর বৈঠকে ডাকা হয়েছে। রাজধানীর বিজ্ঞান ভবনে দুপুর তিনটেয় বৈঠক হবে।
সোমবার রাতে হৃদরোগে দিল্লিতে এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন। তাঁর নাম গজ্জন সিং। তিনি পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার খাট্টরা গ্রামে থাকতেন। দিল্লি সীমান্তে টিকরি অঞ্চলে কৃষকদের জমায়েতের মধ্যে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ৭১ বছরের মধ্যে এবারই নভেম্বরে সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা পড়েছে। ঠান্ডাতেই গজ্জন সিং অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। গত সপ্তাহে কৃষকদের ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরুর পরে এই নিয়ে দু’জনের মৃত্যু হল।
সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লি পুলিশ টুইট করে জানায়, দিল্লি সীমান্তে সিংঘু সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টিকরি সীমান্ত দিয়েও যান চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। দিল্লি-উত্তরপ্রদেশ সীমান্তে গাজিপুরে রাস্তা আটকানো হয়নি। দিল্লির বুরারিতে যে কৃষকরা গিয়েছিলেন, তাঁরা এদিন ‘রোড মার্চ’ করেছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ও কৃষি আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়েছে।
হরিয়ানার প্রতিটি খাপ কৃষকদের আন্দোলন সমর্থন করেছে। তাঁরা মঙ্গলবারই জমায়েত করবে দিল্লিতে। হরিয়ানার খাপ প্রধান সোমবীর সাঙ্গোয়ান বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করছি, তারা কৃষি আইনগুলি নিয়ে একবার বিবেচনা করুক। প্রতিবাদ করার অধিকার সকলেরই আছে।”