রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে নির্ভয়ার ধর্ষক মুকেশ কুমার সিং

0
331

দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ যেনতেন প্রকারেণ মৃত্যুদণ্ড এড়াতে কোমরবাঁধা পণ করেছে নির্ভয়ার ধর্ষকরা। ফাঁসির দিন যতই এগিয়ে আসছে, ততই নতুন নতুন পন্থা বের করছে চার ধর্ষক, অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্তা, মুকেশ কুমার সিং এবং বিনয় শর্মা।

প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টে গেল নির্ভয়া ধর্ষণকাণ্ডের চার দোষীর একজন মুকেশ সিং। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ফাঁসির দিন ধার্য হওয়ার পরেই পালা করে সুপ্রিম কোর্টে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে ফাঁসি রদের আবেদন জানিয়ে পিটিশন ফাইল করেছিল চার আসামি অক্ষয় ঠাকুর, মুকেশ সিং, পবন কুমার গুপ্ত এবং বিনয় শর্মা। ফাঁসি রদের আবেদন আগেই খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ফাঁসির রায় সংশোধনের আর্জি জানিয়ে চার দোষীর কিউরেটিভ পিটিশনও খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে রাষ্ট্রপতির কাছে ফের প্রাণভিক্ষআর আবেদন জানিয়ে আপিল করেছিল মুকেশ সিং। গত ১৭ জানুয়ারি মুকেশের প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ জানিয়েই শীর্ষ আদালতের গেছেছ মুকেশ। তার আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার বলেছেন, “আর্টিকল ৩২-এর অধীনে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ২০১৪ সালে শত্রুঘ্ন চৌহান বনাম ভারত সরকার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্ধারিত গাইডলাইন মেনে পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। ”

গতকাল, শুক্রবার দণ্ডিতদের আইনজীবী এ পি সিংহ দিল্লির পাটিয়ালা কোর্টে দাবি করেছেন, তাঁর মক্কেলরা সুপ্রিম কোর্টে কিউরেটিভ পিটিশন (রায় সংশোধনীর আর্জি) এবং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে আগ্রহী। কিন্তু তিহাড় জেল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে বিলম্ব করছেন। ফলে তিন দণ্ডিত আপিল করতে পারছে না।

৭ জানুয়ারি দিল্লির এই দায়রা আদালতই চার দণ্ডিতের ফাঁসির দিন ২২ জানুয়ারি ঘোষণা করেছিল। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দণ্ডিত পবনকুমার গুপ্ত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানায়। সেই আবেদন না-মঞ্জুর হলেও আইনমাফিক ফাঁসির দিন পিছিয়ে দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে, চার জনের ফাঁসি হবে ১ ফেব্রুয়ারি। এর মধ্যেই মুকেশ সিং রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানিয়েছিল। সেই আবেদন দ্রুত খারিজ করে দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

তিহাড় জেলের দু’নম্বর সেলে রাখা হয়েছে মুকেশ, পবন ও অক্ষয়কে। তিন নম্বর সেলে রয়েছে বিনয় শর্মা। চার দোষীকেই আলাদা আলাদা সেলে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ। পাঁচ জন কারারক্ষী ওই সেলের উপরে নজর রাখছেন। নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁদের বদলে দেওয়া হচ্ছে। রয়েছে বেশ কয়েকটি সিসি ক্যামেরাও।

জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ফাঁসির দিন ঠিক হওয়ার পর থেকেই মুখে কুলুপ এঁটেছে আসামিরা। তারা নাকি পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে দেখাও করতে চায়নি। ঠিকমতো খাবারও খাচ্ছে না তারা। এমনকি শেষ ইচ্ছার প্রশ্নেও তারা নীরব। ফাঁসির পরে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত তাদের জিনিসপত্র কার হাতে তুলে দেওয়া হবে সেই নিয়েও কিছু বলতে চায়নি তারা। জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ব্যাপারে কিছু আইনী কাগজপত্রে সই করতে হয়। কিন্তু আসামিরা নাকি সেটাও করতে রাজি হচ্ছে না। উল্টে কীভাবে বার বার প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়ে ফাঁসির দিন পিছিয়ে দেওয়া যায়, সেই আলোচনাতেই মত্ত তারা।

এদিকে ফাঁসির প্রস্তুতিও জোরকদমে চলছে তিহাড়ে। কিছুদিন আগেই বস্তা ঝুলিয়ে হয়ে গেছে ডামি মহড়া। আসামিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে নিয়মিত। তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখছেন জেলের ডাক্তাররা। জেল সূত্রে খবর, ফাঁসির দিন যত এগিয়ে আসছে উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে আসামিদের। কখনও শেষবার প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে তারা, আবার কখনও দোষ চাপাচ্ছে জেল কর্তৃপক্ষের ঘাড়েই।

Previous articleবিদায়বেলাতেও শীতের ঝোড়ো ইনিংস,বাড়বে ঠান্ডা হবে বৃষ্টিও
Next articleসম্পাদকীয়ঃ এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের অন্য মানে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here