দেশের সময় :-রাজ্যে সবেমাত্র তিন দফার নির্বাচন পর্ব সাঙ্গ হয়েছে,তার মধ্যেই বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা শুরু হয়েছে এ রাজ্যে এবার পালা বদল হতে চলেছে।

তিন দফায় ১০টি আসনের মধ্যে শাসক তৃণমূল খাতা খুলতে পারে নি বলে কটাক্ষ করার পাশপাশি বিজেপির রাজ্য সম্পাদক জানিয়ে দিয়েছেন এতদিন রাজ্য জুড়ে নির্বাচনে তৃণমূল ম্যাজিক দেখাতো,এবার তারা ম্যাজিক দেখবে।বোঝাই য়াচ্ছে দিলীপবাবু বিজেপির নির্বাচনী সাফল্যের ম্যাজিক দেখাবার কথা বলতে চেয়েছেন।

এমনিতে নির্বাচনে কর্মীদের চাঙ্গা করতে নেতারা এরকম কথা বলেই থাকেন,কিন্তু বিজেপি নেতারা শুধু কথা বলেই থামছেন না তারা এ রাজ্যে সরকার বদলের দিন তারিখও বলে দিচ্ছেন।যেমন মুকুল রায় জানাচ্ছেন ২৩ মের পর পরই রাজ্য বিধানসভা থেকে একের পর এক বিধায়ক তৃণমূল দল ছাড়তে শুরু করবেন,আর তারপর আগামী নভেম্বরের মধ্যেই রাজ্য বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকার বদল হয়ে যাবে।

মুকুল রায়ের আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহও বলেছিলেন,২৩ মে এ রাজ্যে ব্যালট বাক্স খোলা হবে আর অন্য দিকে মমতা দিদির সরকার পড়তে শুরু করবে।প্রশ্ন হল বার বার এ রাজ্যে সরকার বদলের কথা বলে কী ইঙ্গিত দিতে চাইছেন বিজেপি নেতারা?লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল যদি ভাল ফল নাও করে তাহলেও তো এই নির্বাচনে সরকার বদলের কেন সম্ভাবনা সেভাবে নেই,তার জন্য তো বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।সে সব যুক্তির কথা না ভেবেই কী বিজেপি এরকম বার্তা দিচ্ছে,বিষয়টা কিন্তু একেবারে হেলাফেলা করার নয়।

আসলে কোন কোন সূত্র থেকে খবর মিলতে শুরু করেছে যে বিজেপি নেতারা তলে তলে বিভিন্ন তৃণমূলের বিধায়ক ও নেতা কর্মীদের টোপ দিয়ে কিনে নেবার কৌশল সাজিয়ে ফেলেছে,এমনকী ভোটে প্রকাশ্যে যারা তৃণমূলের হয়ে নামছে তারাও নাকি শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে না,করছে বিরোধী দলের হয়ে,যে সব এজেন্ট তৃমমূলের হয়ে বুথে বুথে যাচ্ছেন তারাও তৃণমূল বিরোধী কৌশলে অংশ নিয়েছে বলে খবর।

এবার এই খবর যদি সত্যি হয় তাহলে তৃণমূলের পক্ষে তা ভয়াবহ হতে পারে,যাদের ভরসা করে সৈনিক সাজিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াইতে নামাচ্ছেন,তারাই যদি পেছনে অন্য অংক সাজিয়ে ফেলেন তা খুবই বিপদের হবে তৃণমূলের পক্ষে।

তবে এ খবরের সত্যতা নিয়ে কিন্তু কোন গ্যারান্টি দেওয়া সম্ভব নয়।তবে যে ভাবে বার বার জোর দিয়ে রাজ্যে সরকার বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছেন বিজেপি নেতারা তা থেকে কিন্তু একটা সন্দেেহ হয়ই।ভোট বাদ দিয়ে সরকার বদলের প্রক্রিয়া দেশে চালু আছে,টাকার থলি নিয়ে বিধায়ক কেনা বেচার নজিরও এদেশে বিরল নয়।সেই নজির এ রাজ্যেও এসে পৌঁছুচ্ছে,আমরা দেখেছি তৃণমূলই বিভিন্ন সময় নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিরোধী বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিজের দলে নিয়ে এসেছে,এবার কী সেই খেলাটাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে খেলতে যাচ্ছেন বিজেপি নেতারা!

তাই কী বার বার বলছেন এবার তারা নির্বাচনে ম্যাজিক দেখাবেন।গণতন্ত্রের ম্যাজিক হলে কোন আপত্তি থাকত না কিন্তু ম্যাজিকটা যদি অন্যকিছুর হয় তবে কিন্তু একটা অন্য বিপদও ঘনিয়ে আসতে পারে তা হল গণতন্ত্রের টাকার কাছে বিলিয়ে যাওয়ার বিপদ।সেটা কিন্তু ভারতীয় শাসনতন্ত্রের ক্ষতি করবে এ রাজ্যের বিজেপি নেতারা যে ভাবে সংগঠন ছাড়াই নির্বাচনে ম্যাজিক দেখাতে বদ্ধপরিকর হয়ে উঠেছেন তাতে মনে হয় আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হয়তো এ রাজ্যের রাজনৈতি ময়দানে অনেককিছু ঘটবে।

তবে যাই ঘটুক তার সঙ্গে সুস্থ গণতন্ত্রের যে কোন সম্পর্ক থাকবে না তা বোধহয় বলাই যায়।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ রাজ্যের মানুষ পরিবর্তনের কান্ডারি করেছিলেন কিন্তু তিনি সেই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করে গায়ের জোরে ক্ষমতাকে প্রসারিত করতে গিয়ে,আর এক অন্যায়ের রাস্তা খুলে দিয়েছেন কিনা সেটা তাকেও ভাবতে হবে।বিজেপি যে কোন একটা নির্দিষ্ট কৌশলের সূত্র ধরেই ক্রমশ রাজ্যে ক্ষমতার বদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে তা পরিষ্কার,তবে তা কতটা বাস্তবায়িত হয় সেটার দিতে সকলেরই কৌতুহল থাকবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here