দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ
আগামী কাল, মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন দিনের জন্য দিল্লি সফরে যাচ্ছেন। আবার মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন-ও বটে। এই দু’টো ব্যাপারের সমাপতনেই নতুন জল্পনা, অঙ্ক, কৌতূহল ইত্যাদি জন্ম নিয়েছে সোমবার।
তার কারণও রয়েছে। বিশেষ করে যখন গত ৭২ ঘন্টা ধরে দেখা যাচ্ছে, সিবিআই ও রাজীব কুমারের মধ্যে লুকোচুরি খেলা চলছে। এবং দফায় দফায় নবান্নে গিয়ে চিঠি ধরিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সি।
নবান্ন সূত্র অবশ্য দাবি করছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হতে পারে বুধবার বিকেলে।
এখানে বলে রাখা ভাল, লোকসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন জনসভা থেকে নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে বলছেন, “ওঁর গালে গণতন্ত্রের থাপ্পড় মারা উচিত”, ঠিক সেই সময়েই মোদী একটি কথা হাটখোলা করে দিয়েছিলেন। বলিউড সুপারস্টার অক্ষয় কুমারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ। বছরে অন্তত তিন-চার বার তাঁকে কুর্তা, পাজামা আর বাঙালি মিষ্টি পাঠান মমতা।
ফলে মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি যাত্রার কথা জানাজানি হতেই অনেকেরই কৌতূহল তৈরি হয়েছে, এ যাত্রায় প্রধানমন্ত্রীর জন্য কী উপহার নিয়ে যাচ্ছেন দিদি? একে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন, তার উপর শারদীয়া উৎসব আসছে। এমনিতেই দুর্গাপুজোয় নেতা, আমলা, সাংবাদিক মায় বহু সাধারণ লোককে পাঞ্জাবি, ধুতি, শাড়ি উপহার দেওয়ার অভ্যাস রয়েছে মমতার। ইতিমধ্যেই সে সব বিলি বণ্টন শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে এগুলো খবর নয়। মূল আগ্রহের বিষয় হল, কী নিয়ে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর কথা হবে?
নবান্নের কিছু আমলার মতে, রাজ্যের বহু প্রকল্পে কেন্দ্র বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে। তাতে সমস্যায় পড়ছে রাজ্য সরকার। কারণ, বহু প্রকল্পের ক্ষেত্রে রাজ্য বারো আনাই কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। যেমন ধরা যাক একশো দিন কাজের প্রকল্প। এমনিতেই গ্রাম বাংলায় কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিটি জেলা সফরে গিয়েই বলছেন, সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ যত বেশি সম্ভব একশো দিনের কাজের আওতায় আনতে।
যাতে কেন্দ্রের পাঠানো টাকাতেই গ্রাম বাংলার মানুষের যত বেশি সম্ভব উপার্জনের ব্যবস্থা করা যায়। তা ছাড়া পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রস্তুতিও চলছে। এ বারের যোজনায় রাজ্যের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর দাবিও করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে পোড় খাওয়া নেতারা বলছেন, এ ধরনের বৈঠক আসলে হাতির দাঁতের মতো। দেখানোর জন্য এক, আর খাওয়ার জন্য আর এক। দু’জনের মধ্যে কী আলোচনা হবে, তা বাইরে আসার সম্ভাবনা কম। যা বাইরে বলা হবে, তা হতে পারে স্রেফ লোক দেখানো।