দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আজ মঙ্গলবার ২১ জুলাই। কোভিড-কারণে ধর্মতলায় এ বছর একুশের শহিদ সমাবেশ হচ্ছে না। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তৃতায় সম্ভবত কালই দলকে একুশের লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতির বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/01-1024x307.jpg)
তার আগে সোমবার সন্ধ্যায় বোমা ফাটালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সম্পর্কে লম্বা নালিশ ঠুকলেন তিনি। পরে ঢাক পিটিয়ে তা জানিয়েও দিলেন ধনকড়।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/03.jpg)
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর প্রায় ১ ঘন্টা ধরে বৈঠক হয়েছে। সেখানে কয়েকটি বিষয়ে ‘ফোকাসড’ আলোচনা হয়েছে। সেগুলি হল—এক, কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি ও রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। দুই, অরাজক পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করা। তিন, উমফানের ত্রাণ বন্টন নিয়ে বল্গাহীন দুর্নীতি।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/04.jpg)
রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে বাংলায় শাসক দল তৃণমূল গোড়া থেকেই সমালোচনা করছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবার তাঁকে বিজেপির মুখপাত্র বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তবে এও ঠিক যে, রাজ্যপাল যে বিষয়গুলি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে তুলে ধরেছেন, তা নিয়ে রাজ্যের সমস্ত বিরোধী দলের বক্তব্য কমবেশি একই।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/10-1024x853.jpg)
বাম, কংগ্রেস, বিজেপি-ই সকলেই কোভিড ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রথম থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছে। দ্বিতীয় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অধীর-সুজন-মান্নান-দিলীপ ঘোষদের বক্তব্যও প্রায় এক। বিশেষ ফারাক নেই। তা ছাড়া উমফানের ত্রাণ বন্টন নিয়ে দুর্নীতির ব্যাপারেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তামাম বিরোধী দলের অভিযোগ একই।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/01-1024x307.jpg)
আপাত ভাবে রাজ্যপালের বক্তব্যেও সে সবেরই প্রতিফলন ঘটেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, ব্যাপারটা কি এতোটাই সহজ এবং সরলরেখায় বিচরণ করছে? নাকি নেপথ্যে অন্য আরও কিছু আছে! রাজ্য রাজনীতিতে এ ব্যাপারে অনেকেই এখন সন্দিহান হয়ে পড়েছেন।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/04-1024x447.jpg)
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, অমিত শাহ-জগদীপ ধনকড়ের বৈঠকের সময়টা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কাল একুশের লড়াইয়ের বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিড মোকাবিলায় তাঁর সরকার কী তৎপরতা দেখিয়েছে বা গত পাঁচ বছরে বাংলার কী উন্নয়ন করেছে তা হয়তো আরও একবার ব্যাখ্যা দেবেন তৃণমূলনেত্রী।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/03-1024x535.jpg)
আর তার মাধ্যমে রাজ্যের মানুষের আস্থা ধরে রাখতে চাইবেন। অথচ আজ রাজ্যপাল যে সব কথা বলছেন, তার সবটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থার কথা। এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু রাজ্যপাল যে ভাবে প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, তার মাধ্যমে এই বার্তাই যাচ্ছে যে বাংলায় সুশাসন কায়েম করতে করতে কোথায় কোথায় ব্যর্থ হয়েছে তৃণমূল সরকার।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/01-1024x307.jpg)
ফলে আরও একটি প্রশ্ন অনিবার্য ভাবেই উঠছে। তা হল, বাংলায় কি রাষ্ট্রপতি শাসন কায়েম হতে পারে। রাজ্যপালের রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই ধরনের কোনও পদক্ষেপ কি করতে পারে কেন্দ্র?
জবাবে বিজেপির এক প্রবীণ নেতা এদিন বলেন, “আপাতত সেই সম্ভাবনা নেই। ভবিষ্যতে রাজ্যে কী পরিস্থিতি হবে, সেই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ করবে তা আজই বলে দেওয়া সম্ভব নয়। তবে অমিত শাহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই বলেছেন, রাজ্যে নির্বাচিত সরকার চলছে। সেই সরকার ফেলার উদ্দেশ্য তাঁর নেই। সরকার ফেলবেন জনতাই।”
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/04-1024x447.jpg)
বিজেপির ওই নেতার কথায়, দল বা কেন্দ্রের সরকার এমন কিছু করবে না যাতে মমতা নিজেকে শহিদ হিসেবে তুলে ধরে সহানুভূতি চাইতে পারে। বরং মানুষ দেখুক এই সরকার কীভাবে ল্যাজে গোবরে হচ্ছে, উমফানের ছোবলের পরেও এই দলের একাংশ নেতা কীরকম নির্লজ্জ হয়ে দুর্নীতি করে চলেছেন।
![](https://deshersamay.com/wp-content/uploads/2020/07/01-1024x307.jpg)