দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: বয়স মাত্র ১২ বছর। তবে কিশোরী জামলো মাকদাম ছিল কঠোর পরিশ্রমী। কাজ করত তেলেঙ্গানার একটি গ্রামের লঙ্কা ক্ষেতে। লকডাউনের মধ্যেই ওই ক্ষেতে কাজ করা বাকিদের সঙ্গে বাড়ি ফেরার পথ ধরেছিল সে। পায়ে হেঁটেই পার করেছিল ১৫০ কিলোমিটার রাস্তা। কিন্তু বাড়ি ফেরা আর হয়নি ওই কিশোরীর। নিজের গ্রাম থেকে ঘণ্টাখানেকের দূরত্বে থাকাকালীনই মৃত্যু হয় তার। ১২ বছরের কিশোরীর শরীর আর সইতে পারেনি এত ধকল। তাই এই লড়াইটা আর জেতা হল না জামলোর।
গত ১৫ এপ্রিল তেলেঙ্গানা থেকে ছত্তীসগড়ের বিজাপুর জেলায় নিজের গ্রামে উদ্দেশে রওনা হয়েছিল এই কিশোরী। সঙ্গে ছিল আরও ১১ জন সঙ্গী। তেলেঙ্গানার ওই লঙ্কা ক্ষেতে একই সঙ্গে কাজ করত এরা সবিয়া। প্রায় তিনদিন ধরে জঙ্গলের ভিতরের রাস্তা দিয়ে সফর করছিল এই দলটি। ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে চলছিল তাদের বাড়ি ফেরার অভিযান। হাইওয়ের রাস্তা এড়িয়ে চলছিল এই দলটি।
শনিবার দুপুরে নিজের গ্রামের প্রায় কাছাকাছি এসে পড়েছিল ওই কিশোরী। বাকি ছিল মাত্র ১৪ কিলোমিটারের রাস্তা। কিন্তু আচমকাই পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা শুরু হয় ওই কিশোরীর। তারপরেই সব শেষ। অ্যাম্বুল্যান্সে করে শেষমেশ বাড়ি পৌঁছয় জামলোর নিথর দেহ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনদিন ধরে টানা জার্নির পর শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে গিয়েছিল কিশোরীর। এছাড়াও শরীরে ছিল অপুষ্টি। মৃত্যুর পর তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। জানা গিয়েছে, কিশোরীর কোভিড-১৯ রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
কিশোরীর বাবা জানিয়েছেন, গত দু’মাস ধরে তেলেঙ্গানার একটি গ্রামে লঙ্কার ক্ষেতে কাজ করত তাঁর মেয়ে। ঘটনার দিন হঠাৎই পেটে ব্যথা শুরু হয় তার। তারপর বমিও করে দে। কিশোরীর দলের বাকিরা জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই ঠিকমত খাওয়াদাওয়া করছিল না সে। ওই কিশোরীর পরিবারকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ছত্তীসগড় সরকার।