বনগাঁর ভাঙা গড়া পুজো ও বিসর্জন হয় রাতেই , এখানে সূর্যের মুখ দেখেন না মা কালী ,জানেন কী এমন রহস্যের কারণ ?

0
83
পার্থ সারথি নন্দী, দেশের সময়

বনগাঁর কালীপুজোর কথা উঠলেই উঠে আসে ইছামতী নদী সংলগ্ন আনন্দমার্কেট , গোল্ডেন মার্কেট ও বাসন্তি মার্কেটের সামনে ভাঙা গড়া কালী পুজোর কথা। এখানে কালীপুজোর দিন সন্ধ্যা থেকে পুজোর আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল এখানে সূর্যের মুখ দেখেন না দেবী কালী। তাই সূর্যাস্তের পর প্রতিমা নিয়ে এসে বেদীতে প্রতিষ্ঠিত করে  রাতেই শ্যামা মায়ের পুজো হয়। এমনকী ভোর রাতেই হয় বিসর্জন। জানেন কী এমন রহস্যের কারণ ?

এখানে পুজো মন্ডপের গঠনটা একটু অন্যরকম। নেই কোনও ছাদ বা আচ্ছাদন।স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, দীর্ঘ ৬৩ বছরের  প্রচলিত নিয়ম মেনেই এখানে কোনও বিশেষ ছাউনি  দেওয়া হয়নি। একটি অস্থায়ী মনিহারি দোকানের মধ্যেই  মন্ডপের  একদিক দেওয়াল দিয়ে ঘেরা রয়েছে বটে, তবে উপরে বিশেষ কোনও আচ্ছাদন  থাকেনা। স্থানীয়দের বিশ্বাস এই ভাঙা গড়া দেবী হলেন জাগ্রত।আসলে দেবীরূপেই ‘ কালী মা’ পুজিতা হন এখানে।

স্থানীয় বাসিন্দা দীলিপ নাথ জানান , ১৯৬২ সালে গৌড়হরি নাথ এর উদ্যোগে এই পুজোর শুরু হয় । তারপর আমার সঙ্গী হয়েছেন  জয়দেব প্রামাণিক, যাদব হালদার , গোলক বাবুর মতো ব্যবসায়ীরা । দীলিপবাবুর কথায়, এই পুজোর বৈশিষ্ট হল এখানে সূর্যের মুখ দেখেন না দেবী কালী। তাই সূর্যাস্তের পর প্রতিমা নিয়ে এসে বেদীতে প্রতিষ্ঠিত করে  রাতেই শ্যামা মায়ের পুজো হয়। এমনকী ভোর রাতেই হয় বিসর্জন। এর কারণ, যেখানে মায়ের পুজো হয় । ঠিক সেখানেই একটি অস্থায়ী মনিহারি দোকান আজও রয়েছে । তাই দোকান যাতে বন্ধ না থাকে তার জন্য মায়ের পুজো এক রাতেই সম্পূর্ণ হয় এখানে । পুজোর দিন বিকালে ওই দোকানটি ভাঙা হয় আবার পুজোর পরের দিন সকালেই ফের দোকানটি গড়া হয় । তাই এই পুজোটি  ভাঙাগড়া নামেই পরিচিত ।

পুজো উদ্যোক্তা জয়দেব বনিক বলেন আমার দোকানের মধ্যেই মা,’ এ ভাবেই আসেন প্রতিবছর । মায়ের জন্য দোকান ভাঙা গড়া সম্ভব হয়েছে । পুজোর দিন প্রসাদ বিতরণ করা হয় । আনন্দ মার্কেট , বাসন্তি মার্কেট ও গোল্ডেন মার্কেটের সামনে প্রাসাদ নিতে ভিড় করেন পুণ্যার্থীরা। ফি বছর মায়ের জন্য আপক্ষায় থাকি ।

বনগাঁর বাসিন্দা রবিশঙ্কর বিশ্বাস বলেন , ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি সন্ধ্যায় এখানে মা কে আসতে দেখা যায় । রাতে পুজোও হয় । তবে সকাল হতেই মনিহারি দোকানের দেখা মিললেও মায়ের দর্শনের জন্য ফের একটি বছর অপেক্ষা করতে হয় ।

কথিত আছে, বনগাঁ শহরের দক্ষিণ প্রান্তে ট’ বাজারের পথের ধারে গৌড়হরি নাথ বাংলাদেশ থেকে আসা কিছু লোকজন নিয়ে এসে এখানে এই পুজো শুরু করেন । সেই থেকেই রোদ, ঝড়, জল-বৃষ্টিতে পুজিতা হন শ্যামা মা।এখানে সূর্যের মুখ দেখেন না দেবী কালী। তাই সূর্যাস্তের পর প্রতিমা নিয়ে এসে বেদীতে প্রতিষ্ঠিত করে  রাতেই শ্যামা মায়ের পুজো হয়। এমনকী ভোর রাতেই হয় বিসর্জন। পুজো উদ্যোক্তরা দেশের সময়’কে জানান, এই বছর নিয়মেও ভাঙা গড়া হয়েছে । পুণ্যার্থীদের দর্শনের জন্য তাই পুজোর পরের দিনও মাকে রাখা হয় বেদীতে । এখানেই ভাঙা গড়া নামের স্বার্থকতা বলে মনে করছেন পুণ্যার্থীরা ।

Previous articleবিয়ের প্রথম নিমন্ত্রণ মা ভবতারিণীকে দিয়েই শুরু তরুণ- তরুণীর, কালীপুজো উপলক্ষ্যে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে ভক্তের ঢল : দেখুন ভিডিও
Next articleদীপাবলিতে ‘বন্ধু’ মোদীকে ফোন ট্রাম্পের ,কী কথা হল?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here