প্রতারণার শিকার খোদ পুলিশ আধিকারিক। কাকদ্বীপ মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নামে ভুয়ো ফেসবুক প্রোফাইল খুলে টাকা আদায়ের চেষ্টা। ঘটনা নজরে আসতেই তৎপর হন পুলিশ আধিকারিক। মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আপাতত জেরা করছে পুলিশ। শুধু কাকদ্বীপের এসডিপিও নয় আরও অনেকের ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে প্রতারণার জাল ফেঁদেছিল এই প্রতারক ।
ঘটনাটি ঠিক কী ঘটেছিল? চলতি বছরের ১ জুন কাকদ্বীপের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অনিল কুমার রায়ের পরিবারের সদস্যদের গ্রুপ ফটো ব্যবহার করে এক ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে পুলিশ আধিকারিকের পরিচিতদের ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্টও পাঠানো হয়। তাঁর পরিচিতদের অনেকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট গ্রহণও করেন। তারপর সেই ফেক অ্যাকাউন্ট একাধিক পরিচিতদের কাছ থেকে ফোন কিংবা গুগল পে’র মাধ্যমে কখনও ২৫ হাজার আবার কখনও ৩০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। চিকিৎসার জন্য এই টাকা প্রয়োজন বলেও জানানো হয়। সন্দেহ হওয়ায় পরিচিতরা পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে ও মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন। এ সব কথা শুনে অনিল বাবু যথেষ্ঠ বিরম্বনার মধ্যে পড়েন। তৎক্ষণাৎ তিনি তাঁর আসল ফেসবুক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রতারকের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ জানান। ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ওই রাতেই নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া সম্ভব হয়।
অনিলবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে সুন্দরবন পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম থানায় এই বিষয়ে একটি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও করা হয়। তদন্তে জানা যায়, মধ্যপ্রদেশের রাইসেন জেলার পাপডা গ্রামের দীনেশ গুরজার নামে এক প্রতারক তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে এই ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছে। সুন্দরবন সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ আধিকারিকদের একটি দল মধ্যপ্রদেশে রওনা দেয় প্রতারককে ধরার উদ্দেশ্যে৷ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এ রাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। তার ওই মোবাইলটি সিম কার্ড-বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
অভিযুক্তকে কাকদ্বীপ আদালতে তোলা হলে আদালত তাকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) রাকেশ সিং অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানেই অপরাধের দ্রুত কিনারা ও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয় বলে জানিয়েছেন কাকদ্বীপের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অনিল কুমার রায়৷