দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমবাংলার পুলিশ ‘ওয়ান অফ দ্য বেস্ট’। ব্রিটেনের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডসের সঙ্গে তুলনা করা হতো কললকাতা পুলিশকে। এখন তার থেকেও ভাল কাজ করছে কলকাতা পুলিশ। সোমবার বিকেলে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি জানান, সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতিতে রাস্তায় নেমে লড়াই করেছেন পুলিশকর্মীরা। তাঁদের সাহসিকতাকে সম্মান জানাতে ১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে এবার থেকে পুলিশ দিবস হিসেবে পালনের কথাও ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, সকলে যখন দরজা বন্ধ করে করোনা মোকাবিলা করেছেন, তখন রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। সময়ের অতিরিক্ত কাজ করে চলেছেন তাঁরা। ঝুঁকি নিয়ে ট্র্যাফিক সামলাচ্ছেন একটা বড় অংশ। অনেককে ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকতে হচ্ছে ব্যারাকে। ইতিমধ্যেই বহু পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত, মারাও গেছেন ১৮ জন। তার পরেও তাঁরা লড়াই করে যাচ্ছেন মানুষের জন্য। পুলিশের সংক্রমণ ঠেকাতে নতুন ব্যারাক তৈরি করা হবে দূরত্ব বিধি মেনেই, ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বাংলায় ১০ কোটি মানুষ বাস করেন। ঘিঞ্জি এলাকা। তার মধ্যেও লকডাউন কেউ মানছেন কিনা বা সঠিক ভাবে মাস্ক পরছেন কিনা– এই যাবতীয় বিষয়ই দেখভাল করছেন পুলিশকর্মীরা। কনটেনমেন্ট জোনে পৌঁছে দিয়েছেন খাবার কিংবা ওষুধপত্র। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি নানা মানবিক ও সামাজিক কাজ করেছে পুলিশ। তার পরেও যা কিছু হচ্ছে পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। এটা ঠিক নয়। এত বড় রাজ্যে দুয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। তা বাদ দিলে পুলিশের অবদান অপরিসীম।”
এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন, অন্য রাজ্যগুলির দিকে তাকালে পুলিশি ব্যবস্থার করুণ হাল চোখে পড়ে। তিনি বলেন, যাঁরা কথায় কথায় রাজ্যের পুলিশকে বদনাম করেন, তাঁরা যেন উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, বিহারের মতো রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থার দিকে চোখ রাখেন। সেই তুলনায় অনেক ভাল কাজ করছে বাংলার পুলিশ।
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “পুলিশকর্মীদের সুযোগ-সুবিধা দেখা উচিত আমাদের। তাঁদের পরিবারের ভালমন্দ ভাবার দায়বদ্ধতা আছে আমাদের। তাঁদেরও নানা সুবিধা-অসুবিধা থাকতেই পারে। তাঁরা কোথায় বলবেন? এগুলো দেখা আমাদেরই দায়িত্ব। এর আগেও ২০১২ সালে আমরা ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি করেছিলাম, সেই বোর্ড সাধ্যমতো কাজ করেছে। আবারও আমরা পুলিশের সমস্যায় পাশে দাঁড়ানোর জন্য ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি করব। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওই বোর্ড কাজ শুরু করবে।”
এর পাশাপাশি মমতা ঘোষণা করেন, রাজ্য পুলিশের মহিলাদের পদোন্নতির সুযোগ বাড়ানো হবে। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলা পুলিশরাও সমানাধিকার পাবেন এবার থেকে। প্রোমোশনের ক্ষেত্রে শুধু কাজই বিচার্য হবে, লিঙ্গ নয়। তাই পুরুষ পুলিশদের মতোই একইসঙ্গে প্রমোশন পাবেন মহিলা পুলিশরাও। সংখ্যায় কম হওয়ার জন্য মহিলা কর্মীদের প্রোমোশন পেতে আর দেরি হবে না। পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পুলিশের অভিন্ন ক্যাডার তালিকা তৈরি হবে।