দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কেন্দ্রের সঙ্গে দু’দফায় বৈঠকে বসেও কোনও রফাসূত্র পাননি কৃষকরা। শনিবার আবার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে দু’পক্ষের। কিন্তু দিল্লি সীমান্তে কৃষকদের এখন একটাই দাবি, প্রত্যাহার করতে হবে কৃষি আইন। তার জন্যে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকুক কেন্দ্রীয় সরকার। সেইসঙ্গেই এবার তাঁরা আগামী ৮ নভেম্বর, মঙ্গলবার দেশজুড়ে বনধের ডাক দিয়েছেন। একইসঙ্গে দিল্লির সমস্ত রাস্তা বন্ধের হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।
কৃষকরা জানিয়েছেন, সমস্ত হাইওয়ের টোল গেট অবরুদ্ধ করে দেবেন তাঁরা, আর বনধের অংশ হিসেবে সরকারকে টোল আদায় করতে দেবে না। কৃষকনেতা হরিন্দর সিং লাখোয়ালের দাবি, ‘আরও বহু মানুষ আমাদের সঙ্গে আসতে চলছেন।’ শনিবার কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসলেও তাঁরা কেবলমাত্র যে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অটুট থাকবেন, তাও জানিয়ে দিয়েছেন কৃষক নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর কৃষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর। তিনি কৃষক নেতাদের নিয়ে পৃথক আর একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিলে, কৃষক নেতৃত্ব তা মানতে রাজি হননি। ওই বৈঠক নিষ্ফলা হয়। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বুধবার অমিত শাহ বাসভবনে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী। রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও সেখানে ছিলেন। কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। এরপর অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর জন্য অমিত শাহের কাছে আবেদন করেন তিনি।
শুক্রবার নবম দিনে পড়ল আন্দোলন। এর মধ্যে কৃষক নেতারা জানিয়েছেন, তাঁর দীর্ঘ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েই দিল্লিতে এসেছেন। কৃষক স্বার্থবিরোধী কেন্দ্রের তিনটি কালো আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে তাঁদের বিরত করা যাবে না বলে তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কৃষক নেতাদের দাবি, বিশেষ সংসদ অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনগুলি সরকারকে প্রত্যাহার করতে হবে।
বন্ধ চলাকালীন সমস্ত জাতীয় সড়ক এবং টোলপ্লাজাগুলি অবরোধ করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কিসান ইউনিয়ন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হরিন্দর সিংহ লাখোয়াল সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘কৃষি আইন সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাহার করতে হবে বলে গতকালই কেন্দ্রকে সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলাম আমরা। ৫ ডিসেম্বর দেশজুড়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কুশপুত্তলিকা দাহ করব আমরা। ৮ ডিসেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছি। আরও অনেক মানুষ আমাদের এই আন্দোলনে যোগ দেবেন।’
এদিন কৃষকদের সঙ্গে ফোন কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।