দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন। কাশ্মীরের রাজৌরিতে বোমা বর্ষণ এবং ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট পাকিস্তানের হেফাজতে যাওয়ার পরেও আলোচনায় বসতে রাজি নয় ভারত। বুধবার রাতে নয়াদিল্লিতে নিজ বাসভবনে তিন সেনা প্রধানের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলেছে এই বৈঠক। সূত্রের খবর বৈঠকে পাকিস্তানের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মোদি। এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় তিন বাহিনীর প্রধানকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন তিনি।
কয়েকঘণ্টা আগেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ভারতকে শান্তি আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
ইমরান বলেছিলেন যুদ্ধ কাম্য নয় পাকিস্তানেরও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আলোচনাই একমাত্র পথ।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও দুই দেশের উপর এই নিয়ে চাপ বাড়ছে। ব্রিটেন, চীন, অস্ট্রেলিয়া সহ একাধিক দেশ ভারত এবং পাকিস্তানকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছে।
কিন্তু কোনও চাপের কাছেই ভারত নতি স্বীকার করতে নারাজ। পাক হেফাজতে থাকা বায়ুসেনার পাইলটের গায়ে যেন আঁচড় না লাগে, সেকথা ভারতে নিযুক্ত পাক দূতকে ডেকে সতর্ক করে দিয়েছে ভারত। তারপরেই তিন সেনা প্রধানকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে পাকিস্তান একটু চাপেই পড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ইতিমধ্যে কাশ্মীরের সাম্বা সেক্টরে নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে সব স্কুল বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও ভারত থেকে সমঝোতা এক্সপ্রেসের যাত্রাসূচিতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।
অন্য দিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জইশ জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়াকে লোকসভা ভোটে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য মোদী-অমিত শাহরা যে ব্যবহার করবেন, তা নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু বুধবার যা হয়েছে, তাতে সেই রাজনীতি কিছুটা ধাক্কা খাওয়ার আশঙ্কা থাকতে পারে। বিশেষ করে ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলটকে পাকিস্তান আটক করে রাখার পরে তা এখন কাঁটার মতোই বিঁধছে গেরুয়া শিবিরকে। মোদীর যা মেজাজ, এবং রাজনৈতিক লক্ষ্য, তাতে এই যন্ত্রণা নিয়ে তিনি ভোটে যাবেন বলে মনে হয় না। তাই হতে পারে পাকিস্তানের উপরে ফের আঘাত হানতে পারে ভারত। হয়তো সেই প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই পুরোমাত্রায় শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে সামরিক বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, ফের প্রত্যাঘাতের পথে যাওয়ারও ঝুঁকি রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক উত্তেজনা আরও বাড়লে তা কোন দিকে যে মোড় নেবে, সেটা আগাম বলা সম্ভব নয়। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিশেষ করে আমেরিকা, চিন সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের তরফে উত্তেজনা কমানোর জন্যও চাপও দেওয়া হচ্ছে দুই দেশকে। তাই আশা করা যায়, সেই সব সাত-পাঁচ ভেবেই পদক্ষেপ করবে নয়াদিল্লি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here