চটঘেরা জায়গায় আঙুল টিপলেই জবাব পাবেন: তীব্র কটাক্ষ শুভেন্দুর

0
2074

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঘড়ির কাঁটা টিকটক করে প্রহর গুনছে। গোছগাছ হয়ে গিয়েছে। আজ কাল পরশু— যে কোনও দিন তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি। তার প্রাক মুহূর্তে মঙ্গলবার যেন সেই আবহই তৈরি করতে চাইলেন রাজ্য রাজনীতির অন্যতম দাপুটে নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আজ ১৫ ডিসেম্বর শুভেন্দুর জন্মদিন। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের সর্বাধিনায়ক সতীশ সামন্তরও জন্মদিন আজই। হলদিয়ায় তাঁর স্মরণসভায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু এদিন বলেন, “ব্যক্তি আক্রমণে আমি বিশ্বাস করি না। কেউ কেউ আমাকে ব্যক্তি আক্রমণ করছেন ঠিকই। তাঁরা অনেকে উচ্চ পদে রয়েছেন।” এ কথা বলেই স্বর আরও কয়েক দাগ চড়িয়ে দেন শুভেন্দু। বলেন, “আপনারা বুঝতে পারবেন…। আর কদিন বাদেই জনগণ যখন ওই চটঘেরা জায়গায় যাবেন। আর ঠিক জায়গায় বোতাম টিপবেন। দেখবেন, আপনাদের অবস্থা লক্ষ্মণ শেঠ, অনিল বসু, বিনয় কোঙারদের মতই হবে।”

১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের সভা থেকে নাম না করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন শুভেন্দু। সে দিন নন্দীগ্রামে পাল্টা সভা করেছিল দল। নাম করে না করে শুভেন্দুকে মীরজাফর বলেছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর দলের প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কার্যত তাঁর উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না থাকলে আলু বেচতিস।’

অনেকের মতে, তাঁদের উদ্দেশ করেই এ দিন কড়া কথা শুনিয়েছেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের নেতা। তবে কল্যাণ বা ববির নাম মুখে আনেননি শুভেন্দু। কিন্তু বলেন, “একটা কথা বলে যেতে চাই, শুভেন্দু অধিকারী পদের লোভ করে না। অনেকে বলছিলেন পদ দেখিয়ে লোক আনছে। পদ ছাড়ুক, তার পর দেখব ক’জন লোক থাকে ওঁর সঙ্গে। তাই সই। ২৭ নভেম্বর মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছি। সমস্ত সরকারি পদ ছেড়ে দিয়েছি…।”
এ টুকু বলে মঞ্চের সামনে ও ডান এবং বাম দিকে তাকান শুভেন্দু। বলেন, “এই যে এত মানুষ এসেছেন, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য আসেননি। তাঁরা বিজেপির জন্য আসেননি বা সিপিএমের জন্য আসেননি। এঁদের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক। সারা বছর এঁদের সঙ্গে থাকি। শুধু ভাষণ দিই না, এঁদের রেশনের জন্য কথা বলি।”

পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, শুভেন্দুর এদিনের বক্তৃতা থেকে কতগুলি বিষয় পরিষ্কার। তা হল, তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়লেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তি আক্রমণ হয়তো এড়িয়ে চলতে চাইবেন তিনি। এটা ঠিক, তাঁকে লুঠেরা, বেইমান, বিশ্বাসঘাতক ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই পথ এড়িয়ে চলতে পারেন তিনি। বরং রাজনীতিতে মানুষের চাহিদা, প্রয়োজন—তথা ইতিবাচক বিষয় তুলে ধরতে পারেন। তা ছাড়া এও স্পষ্ট যে, সরকারি ভাবে তৃণমূল ছাড়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন শুভেন্দু। হতে পারে, আগামী ২৪ বা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সে কাজ সেরে ফেলবেন তিনি।

Previous articleবাড়ি ফিরলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
Next article‘হিন্দুদের ভোট নেবে বিজেপি, মুসলিমদেরটা ওরা, আমি কি কাঁচকলা খাব?’,উত্তরবঙ্গে বললেন দিদি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here