দেশেরসময় ওয়েব ডেস্ক: হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে বুধবার জয় হয়েছে ভারতের। তারপরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, আমার সরকার প্রত্যেক ভারতীয়ের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছে। আন্তর্জাতিক আদালত নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে রায় দিয়েছে। এতদিনে সত্য ও ন্যায়ের জয় হল।
প্রধানমন্ত্রী টুইট করেছেন, আন্তর্জাতিক আদালত এদিন যে রায় দিয়েছে, তাকে স্বাগত জানাই। সংশ্লিষ্ট সব তথ্য খতিয়ে দেখার পরে বিচারকরা রায় দিয়েছেন। আমি নিশ্চিত, কুলভূষণ যাদব ন্যায়বিচার পাবেন। আমার সরকার সব ভারতীয়ের নিরাপত্তা ও কল্যাণের জন্য কাজ করবে।
We welcome today’s verdict in the @CIJ_ICJ. Truth and justice have prevailed. Congratulations to the ICJ for a verdict based on extensive study of facts. I am sure Kulbhushan Jadhav will get justice.
Our Government will always work for the safety and welfare of every Indian.
— Narendra Modi (@narendramodi) July 17, 2019
রাষ্ট্রসঙ্ঘের আদালত বলেছে, পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ যতদিন কুলভূষণের শাস্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা না করছে, ততদিন তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সম্ভব নয়। ভারত অভিযোগ করেছিল, পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশনে গৃহীত নীতি অমান্য করেছে। জেলে কুলভূষণের সঙ্গে ভারতের কোনও কনস্যুলেট কর্মীকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। রাষ্ট্রসঙ্ঘ ভারতের এই অবস্থান মেনে নিয়েছে। পাকিস্তানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অবিলম্বে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হোক।
ভারতের বক্তব্য, কুলভূষণের বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারক আবদুল কোয়াই আহমেদ ইউসুফ বলেন, কুলভূষণের দণ্ডাজ্ঞা যতদিন না খতিয়ে দেখা হচ্ছে, ততদিন তার শাস্তি স্থগিত রাখতেই হবে। পাকিস্তানের সমালোচনা করে আন্তর্জাতিক আদালত বলেছে, প্রত্যেক বন্দিকে জানাতে হয় তার কী অধিকার আছে। কুলভূষণকে তা জানানো হয়নি। এক্ষেত্রে পাকিস্তান ভিয়েনা কনভেনশনে গৃহীত নীতি অমান্য করেছে।
আন্তর্জাতিক আদালতে ১৫-১ ভোটেও এই রায় গৃহীত হয়। রায়ে আপত্তি জানিয়েছিল একমাত্র পাকিস্তান। এমনকী পাকিস্তানের বন্ধু চিনও এই রায় মেনে নিয়েছে।
৪৯ বছর বয়সী কুলভূষণ ২০১৬ সালের মার্চে পাকিস্তানের পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। অভিযোগ তিনি ভারতের গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর হয়ে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে গিয়েছিলেন। সেখানে সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়াও তাঁর উদ্দেশ্য ছিল। অন্যদিকে ভারতের দাবি, নৌবাহিনীর প্রাক্তন কর্মী কুলভূষণ ব্যবসা করতেন। ব্যবসার কাজেই তিনি ইরানে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পাকিস্তানের পুলিশ তাঁকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ২০১৭ সালে পাকিস্তানের সেনা আদালতে কুলভূষণকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, পাকিস্তান অবিলম্বে কুলভূষণকে জানাবে, তাঁর কী অধিকার আছে। ভারতের কনস্যুলেটের কর্মীদের সঙ্গেও তাঁকে দেখা করতে দিতে হবে। আমরা আশা করব, পাকিস্তান আন্তর্জাতিক আদালতের রায় মেনে চলবে।
আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের কৌঁসুলি হরিশ সালভে বলেন, পাকিস্তান যদি এবারেও ন্যায়বিচার না করে, আমরা ফের আন্তর্জাতিক আদালতে যাব। অর্থাৎ তিনি বলতে চেয়েছেন, পাকিস্তান কুলভূষণের শাস্তি নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার পর যদি মৃত্যুদণ্ডই বহাল রাখে, ভারত ফের আন্তর্জাতিক আদালতে আবেদন জানাবে।