প্রদীপ দে, ঢাকা: এবার শুধু মন্দির প্রাঙ্গণেই সীমাবদ্ধ থাকবে দুর্গাপুজো। বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, এবার আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা ও বিশেষ কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না।
পাশাপাশি সড়ক বন্ধ করে কোন মণ্ডপ এবার করা যাবে না। এবছর ঢাকা শহরে ২৩২টি পুজো হচ্ছে। গত বছর ছিল ২৩৭টি। আর সারা দেশে এবার ৩১ হাজারের মতো পুজো হচ্ছে। গত বছর ছিল ৩২ হাজারের মতো। সব মিলিয়ে এবার এক হাজারের মতো পুজো কমেছে। যদিও পুলিশের হিসেবে এই সংখ্যা ২ হাজারের মতো হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রমনা কালী মন্দিরের প্রতিমা তৈরি করছেন গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ার প্রতিমা শিল্পী রতন পাল। গত বছরও তিনি ১৮ থেকে ২০টি প্রতিমা তৈরি করলেও এবার মাত্র ১২টি প্রতিমা তৈরি করছেন। সবচেয়ে বেশি আড়াই লাখ টাকা দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে কলাবাগান পুজো কমিটি। এবছর সেখানেও পুজো হচ্ছে না।
আবার যে প্রতিমাগুলো তিনি তৈরি করছেন সেখানেও বাজেটে কাটছাঁট। ফলে উপার্জন কমে গেছে অনেকটাই। রতন বাবুর কথায়, সব মন্দিরেই বাজেট এবার অনেক কম। জগন্নাথ হলের প্রতিমাও তিনিই তৈরি করেন।
তাঁতিবাজারে প্রতিমা তৈরি করছেন বলাই পাল। তিনিও জানিয়েছেন, এবার প্রতিমার সংখ্যা অনেক কম। আগে যেখানে একটি প্রতিমা তৈরি করে এক লাখ টাকা পাওয়া যেত, এবার সেখানে দিচ্ছে ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। চট্টগ্রাম মৃৎশিল্পী সমিতির সভাপতি রতন পাল বললেন,‘ এবছর প্রত্যেকটি পুজো কমিটি খরচ কমিয়েছে।প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম বেড়েছে। প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় আয়ের যেটুকু সম্ভাবনা থাকে, এবার সেটা নষ্ট হয়ে গেছে। তবু পুজোর আয়োজন হচ্ছে বলে মৃৎশিল্পীরা বেঁচে থাকার অবলম্বনটুকু পাচ্ছেন।’
বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদ পুজো সংক্রান্ত ২৬ দফা নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিটি মন্দির নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সকলের জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলক। প্রবেশ এবং বাইরে যাওয়ার পৃথক ব্যবস্থাও রাখতে হবে। কোনও ধরনের পটকা বা বাজি ফাটানো যাবে না। উচ্চস্বরে সঙ্গীত বাজানো যাবে না। মন্দিরে সাজসজ্জা, আলোকসজ্জা, আরতি প্রতিযোগিতা, মেলার আয়োজন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে।