দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিহারের ভোট ঘোষণা হতেই লালুর টুইটার হ্যান্ডল থেকে ভেসে উঠল ছন্দে বাঁধা পাঁচটি লাইন। যার প্রথম কথাই, “উঠো বিহারী, করো তৈয়ারি/ জনতা কা শাসন অবকি বারি…..”
পশু খাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় মামলায় দোষী সাব্যস্ত এখন তিনি রাঁচির জেলে বন্দি। কিডনির অসুখ, ডায়াবেটিস– শারীরিক ভাবে কার্যত নাজেহাল বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব।কিন্তু তাতে কী!

এরপর লালুর টুইটার হ্যান্ডেল থেকে আরও লেখা হয়েছে, “বিহার মে বদলা হোগা/ আফসার রাজ খতম হোগা/ অব জনতা কা রাজ হোগা”
যার অর্থ স্পষ্ট। লালু বোঝাতে চেয়েছেন, বিহারে এবার বদল অনিবার্য। এবং নীতীশ কুমারের সরকার যে মানুষের সরকার নয় তাও উল্লেখ করেছেন ঘুরিয়ে। এবার জনতার সরকার গড়ার ডাক দিয়েছেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী। যদিও এই টুইট দেখে অনেকে বলছেন, লালুপ্রসাদের সেই ঝাঁঝ যেন অনেকটাই মিইয়ে গেছে।

বিহারে ভোট হবে অথচ লালু প্রচারে থাকবেন না– এবারই প্রথম সেই ঘটনা ঘটবে। তবে অনেকের মতে, ভোট ঘোষণার দিনে টুইট করিয়ে লালু জানান দিতে চেয়েছেন, তিনি এবার ‘ভিতরে থেকেই’ যা করার করবেন। হতে পারে এবার থেকে নভেম্বরের সাত তারিখ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই হাওয়া গরম রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন তিনি।

২০১৪ সালে বিপুল মোদী হাওয়ায় কেন্দ্রে বিজেপি সরকার তৈরি হয়েছে। ঠিক তার পরের বছর ২০১৫ সালে ভোট হয় বিহারে। ঐতিহাসিক ভোট। বনিবনার অভাবে এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নীতীশ কুমার। জোট করেন ললুর সঙ্গে। আরজেডি, জেডিইউ-র সেই মহাজোটে শরিক হয় কংগ্রেসও। বিহারের রাজনীতিতে লালু-নীতীশ বরাবরই উল্টো মেরুর। কিন্তু সব ভুলে বিজেপিকে আটকাতে মরিয়া হয়ে নামেন লালুপ্রসাদ। ধাক্কা খায় বিজেপির জয়রথ। বিহারে সরকার গড়ে লালু-নীতীশ জোট। ৮০টি আসন জিতে একক বৃহত্তম দল হয়েও ত্যাগ স্বীকার করেন লালু। নীতীশই মুখ্যমন্ত্রী হন বিহারে।

কিন্তু তারপর দেড় বছরের মধ্যেই পটপরিবর্তন হয়ে যায়। আরজেডি কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ইস্তফা দেন নীতীশ কুমার। কিন্তু অকাল ভোট হয়নি বিহারে। নীতীশকে সমর্থন করে দেয় বিজেপি এবং রামবিলাস পাসোয়ানরা। সেই জোটই এবার ভোটে লড়ছে। উল্টোদিকে আরজেডি-কংগ্রেস।

উনিশ সালে ৩০০ পার করা বিজেপি-র অগ্নিপরীক্ষা বিহারে। কারণ লোকসভার পর মহারাষ্ট্র ভোটে হাত পুড়েছে বিজেপির। হরিয়ানাতেও সামান্য ব্যবধানে সরকার গড়েছে.গেরুয়া শিবির। তাও অনেকে.বলেন, দুষ্মন্ত চৌতালাকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করে হরিয়ানায় ক্ষমতা দখল করেছেন অমিত শাহরা। বিহারের পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডেও গো হারা হারতে হয়েছে বিজেপিকে। এই প্রেক্ষাপটেই ভোট হতে চলেছে বিহারে। আর জেল থেকে.লালু ডাক দিয়ে দিলেন, “উঠো বিহারী ……”
