দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা অতিমহামারী আর বেশিদিন নেই। টিকা দেওয়া শুরু হলে আগামী ছ’মাসের মধ্যেই সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙবে, এমনটাই জানালেন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের প্রধান ডক্টর রণদীপ গুলেরিয়া। তাঁর বক্তব্য, দেশের একটা বড় অংশের মানুষকে টিকা দিতে সময় লাগবে ৬ মাস। আরও ৬ মাস লাগবে রোগ প্রতিরোধ তৈরি হতে। এর মধ্যেই অতিমহামারীর প্রকোপ কমে যাবে।
এইমস প্রধান বলেছেন, আগামী কয়েকমাসে দুটি জিনিস হতে পারে, প্রথমত—দেশের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ সংক্রামিত হবে এবং তাদের সংক্রমণ সেরেও যাবে, দ্বিতীয়—টিকা পাবে যারা তাদের শরীরে ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। সুতরাং সংক্রমণ ছড়ানোর হার কমবে। ধীরে ধীরে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে।
করোনায় মৃত্যুহারও কমবে বলে আশা রাখছেন এইমস প্রধান গুলেরিয়া। তাঁর কথায়, আগামী বছরের শুরু থেকেই টিটাকরণ শুরু হয়ে যেতে পারে। প্রবীণ ও ৫০ বছরের নিচে কোমর্বিডিটির রোগীরা টিকা পাবে। কাজেই সংক্রমণ জনিত জটিল রোগের শঙ্কা কিছুটা হলেও দূর হবে। ৩০ কোটিকে প্রথম ধাপে টিকা দেওয়া হবে। তার জন্য ৬০ কোটি টিকার ডোজ তৈরি হচ্ছে। এই ৩০ কোটিকে টিকা দেওয়া মানে ভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হবে এদের সকলের মধ্যে। কাজেই সংক্রমণ বেশিজনের মধ্যে ছড়াতে পারবে না।
এইমস প্রধান বলছেন, শুরুতে দেখা গিয়েছিল শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি তিন মাসের বেশি টিকছে না। কারও ক্ষেত্রে আরও কম। এখন দেখা যাচ্ছে, কিছু ক্ষেত্রে ভাইরাস প্রতিরোধী অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব প্রায় সাত মাস। কাজেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়ার মতো শক্তি তৈরি হচ্ছে ধীরে ধীরে। তাই আশা করাই যাচ্ছে, টিকার ডোজের প্রভাব এক বছরের কাছাকাছি টিকে থাকতে পারে।
দেশে সেরাম, ভারত বায়োটেক ও জাইদাস ক্যাডিলার টিকায় আশা জাগছে বলে জানিয়েছেন রণদীপ গুলেরিয়া। সেরাম জানিয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যেই কোভিশিল্ড টিকার ১০ কোটি ডোজ তৈরি হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে ২৫০ টাকা প্রতি ডোজ আর ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলিকে হাজার টাকা প্রতি ডোজের হিসেবে টিকা সরবরাহ করা হবে। ভারত বায়োটেক-আইসিএমআরের টিকা এখন তৃতীয় স্তরের ট্রায়ালে আছে। গতকালই সংস্থার প্রথম পর্বের ট্রায়াল রিপোর্ট সামনে এসেছে। ভারত বায়োটেক দাবি করেছে তাদের টিকায় রোগ প্রতিরোধ তৈরি হচ্ছে। টিকার ডোজে কোনও জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়নি। এই টিকা মানুষের শরীরে নিরাপদ ও সুরক্ষিত।