দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে দেশে লকডাউন শুরু হয় মার্চ মাসের ২৫ তারিখ থেকে। তখনই ঘোষণা করা হয় তিন মাসের জন্য অর্থাৎ, এপ্রিল, মে ও জুন মাসে দেশের সব নাগরিককে ফ্রিতে রেশনে চাল বা গম দেওয়া হবে। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। মঙ্গলবার বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণে তিনি জানিয়ে দিলেন আরও পাঁচ মাস এই সুবিধা চলবে। নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় ৮০ কোটি মানুষের জন্য ফ্রি রেশন দেওয়া হবে।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম থেকেই সরকারের নজর ছিল লকডাউনের ফলে কোনও মানুষের যেন খাদ্যাভাব না থাকে। এর জন্য শুধু কেন্দ্রীয় সরকারই নয়, রাজ্য সরকারগুলিও কাজ করেছে। এগিয়ে এসেছেন বহু মানুষ। সামনেই উৎসবের মরসুম। সেই সময় পর্যন্ত যাতে কোনও মানুষের খাদ্যাভাব না থাকে তার জন্য কেন্দ্র ফ্রি রেশন আরও পাঁচ মাসের জন্য চালু করল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ সুবিধা পাবেন। প্রতি মাসে প্রতি ব্যক্তির জন্য ৫ কেজি করে চাল অথবা গম পাওয়া যাবে। এছাড়াও পরিবার পিছু এক কেজি করে ছোলা দেওয়া হবে। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে ৯০ হাজার কোটি টাকা। আগে যে ফ্রি রেশন দেওয়া হয়েছে সেটাও যোগ করলে মোট খরচের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা।
তবে এদিন সবচেয়ে বড় ঘোষণাটাই ছিল পাঁচ মাসের ফ্রি রেশন। প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেন, একটা বড় ঘোষণা করছেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে বলেন, বর্ষা ঋতুতে কৃষি ক্ষেত্র ছাড়া অন্যত্র কাজ কম হয়। অথচ এই সময় থেকেই উৎসবের পরিবেশ শুরু হয়ে যায় দেশে। সামনেই গুরুপূর্ণিমা। এর পরে শ্রবণী উৎসব, রাখি পূর্ণিমা আর তার কিছুদিন পরেই চলে আসবে শারদীয়া। বিহু থেকে ছট, গনেশ চতুর্থী থেকে দুর্গা পুজো, দিপাবলীতে মেতে উঠবে দেশ। সেই সময়ের কথা মনে রেখেই নভেম্বর পর্যন্ত ফ্রিতে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত দেশে গরিব কল্যাণ প্রকল্পে পৌনে দু লক্ষ টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২০ কোটি গরিবের জনধন অ্যাকাউন্টে সরাসরি ৩১ হাজার কোটি টাকা পাঠানো হয়েছে। ৯ কোটি কৃষককে দেওয়া হয়েছে মোট ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও ৮০ কোটি মানুষকে তিন মাস জন প্রতি ৫ কেজি করে চাল বা গম এবং পরিবার পিছু মাসে এক কেজি করে ডাল দেওয়া হয়েছে। মোদী এদিন বলেন, ভারত সরকার লকডাউনের সময়ে যে সংখ্যক মানুষের কল্যাণের জন্য এই প্রকল্প চালু করেছে তা আমেরিকার মোট জনসংখ্যার আড়াই গুণ এবং ব্রিটেনের জনসংখ্যার ১২ গুণ।
বুধবার ১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে আনলক টু। গোটা দেশে কনটেনমেন্ট জোন ছাড়া বাকি সর্বত্র লকডাউন থাকছে না বলে আগেই জানিয়েছে কেন্দ্র। সোমবার প্রকাশিত আনলক টু-এর গাইডলাইনে নতুন কিছু ছাড় অবশ্য মেলেনি। শুধু মাত্র নাইট কার্ফুর সময় বদলে রাত ১০টা থেকে সকাল ৫টা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, এই সময়টায় আরও সতর্ক থাকতে হবে। করোনাভাইরাসের সঙ্গে লকডাউনের সময়ে যে ভাবে গোটা দেশ লড়াই করেছে, সতর্ক থেকেছে সেটা বজায় রাখতে হবে এই সময়েও।