দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ২৯ বছর ধরে টানা মামলা চলার পরে অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মারার অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন লালু আলম। পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে তাঁকে বৃহস্পতিবার বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়া জরুরি ছিল মমতার। কিন্তু তা তিনি দেননি।
সেই দিনটা বাংলার রাজনীতির ইতিহাসে স্মরণীয়। ১৯৯০-এর ১৬ অগস্ট হয়েছিল সেই হামলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন যুব কংগ্রেস নেত্রী। বাম সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল হাজরা মোড়ে। অভিযোগ ওঠে, রাস্তায় প্রতিবাদের সময়ে কয়েক জন তাঁর উপরে লাঠিসোটা নিয়ে চড়াও হন। লাঠির আঘাতে মাথা ফাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয় তাঁকে। লাঠির মাড়ার জন্য মূল অভিযুক্ত হন লালু আলম।
তালতলার বাসিন্দা লালু আলমের বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশ তদন্তে নামে। আলম-সহ ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটও জমা দেয় তারা। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে ওই মামলার চার্জ গঠন এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতে কেটে যায় বহু বছর।
গত বছর সেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় লালু আলম ছাড়া ওই মামলায় যাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল তাঁরা হয় পলাতক নয় মৃত। সরকার পক্ষের আইনজীবী মামলার অধিকাংশ সাক্ষীকেই হাজির করাতে পারেননি আদালতে। এই মামলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষ্য। ঠিক হয়েছিল, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরিকাঠামোর অভাবে তা হয়নি।
এ দিন আলিপুর আদালতের বিচারক পুষ্পল শতপথী বলেন,‘‘যা তথ্য-প্রমাণ আদালতে পেশ করা হয়েছে, তা থেকে ওই হামলায় লালু আলম প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত এমনটা প্রমাণিত হয় না।” তিনি প্রমাণের অভাবের কথা উল্লেখ করে লালুকে বেকসুর খালাস করা হল বলে ঘোষণা করেন।
এ দিন আদালতে স্পষ্টতই খুবই খুশি দেখায় লালু আলমকে। সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘আদালতের রায় শুনে খুব ভাল লাগছে। অনেক দিনের লড়াইয়ের ফল। সেই সময়ে আমরা সিপিএম পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হই। কোনও রাজনীতির সঙ্গে আর যোগ রাখতে চাই না।’’
লালু আলমের বেকসুর খালাস পাওয়া নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি।