দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী হলেও বিপদ কাটেনি। এই অবস্থায় সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী রাজ্যে সার্বিক নিয়ন্ত্রণ বিধি ১৫ জুলাই পর্যন্ত চালু থাকার কথা। সেই তারিখ এগিয়ে আসতেই নিয়ন্ত্রণ বিধির মেয়াদ বাড়বে কি না, তা নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধছে। রাজ্যে চলছে আংশিক লকডাউন। বেশ কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে নানা ক্ষেত্রে। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে রাজ্যে গত দুমাস ধরে এই বিধিনিষেধ চলছে। ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞাগুলি কার্যকর। তবে তার পরে বিধিনিষেধ শিথিল হবে কিনা তা নিয়ে নানা মহলে চলছে জোর চর্চা।
নবান্ন সূত্রের খবর, এখনই পুরোপুরি বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পক্ষে নয় রাজ্য। তবে যে বিধিনিষেধ চলছে, তা আরও একটু শিথিল করা হতে পারে। এক আধিকারিকের কথায়, “গত দুমাস ধরে দফায় দফায় বিধিনিষেধ বাড়ানোয় রাজ্যের কোভিড-গ্রাফ নিম্নমুখী। রাজ্যের স্বাস্থ্য বুলেটিনে দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা এখন হাজারের নীচে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের টার্গেট, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সংখ্যা আরও কমিয়ে আনা। তবে সেইসঙ্গে থার্ড ওয়েভের চোখরাঙানিও মাথায় রাখছে সরকার। সেই কারণেই এখনই বিধিনিষেধ তুলতে চাইছে না নবান্ন।”
নবান্নের শীর্ষ মহলের খবর, এ ব্যাপারে শীঘ্রই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, সব গতিবিধি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণমুক্ত করার সময় এখনও আসেনি। নিয়ন্ত্রণের আগল একেবারে খুলে দিলে সংক্রমণের নিম্নমুখী রেখা আবার ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে।
বিধিনিষেধ লাগু থাকলেও, পরিবহণে আংশিক ছাড় দিয়েছে নবান্ন। ট্রেনের অনুমতি না দিলেও, বাস, ট্যাক্সি, অটো চলতে পারে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। তবে নানা জটিলতায় এখনও রাস্তায় নামেনি সব বাস। অটোর পরিষেবাও আগের মতো নয়। ফলে, অফিসযাত্রী থেকে শুরু করে অনেককেই ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিদিন।
বেশ কয়েকটি জায়গায় স্পেশ্যাল ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে লোকাল ট্রেন চালু করতে হবে। যদিও এই বিক্ষোভ সমাবেশের পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে জানিয়েছিলেন, এখনই ট্রেন চালানোর মতো সময় আসেনি। সেক্ষেত্রে কিছু ভাল কাজের জন্য একটু সমস্যা হয়, এটা স্বাভাবিক। এখন প্রশ্ন, ১৫ জুলাইয়ের পরে ট্রেন চলবে কিনা।
নবান্ন সূত্রের খবর, ট্রেন চলা নিয়ে এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাজ্য সরকার। ট্রেন চলবে কিনা, তা বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন। সেইসঙ্গে কালই জানা যাবে, বিধিনিষেধ আরও কতটা শিথিল হচ্ছে।
স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞ মহলের সূত্র জানাচ্ছে, পড়শি রাজ্য ওড়িশা ও ত্রিপুরায় সংক্রমণের রেখচিত্র নতুন করে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ওই দুই রাজ্যে দল পাঠাতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। মহারাষ্ট্র্রের পরিস্থিতিও এখন অনুকূল নয়। আবার প্রতিবেশী বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে নিয়ন্ত্রণ বিধির ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে রাজ্য সরকার এই সব দিক খতিয়ে দেখতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রের খবর।