দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ভারত বনধের আগে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিল্লিতে। আগামীকাল সোমবার সংযুক্ত কিষান মোর্চা সারা দেশে ধর্মঘট পালন করবে। বিজেপি বিরোধী প্রায় সব দল ছাড়াও শতাধিক গণসংগঠন এই ধর্মঘটকে সমর্থন দিয়েছে। আহ্বায়ক সংগঠনগুলির দাবি, ধর্মঘটে অংশ নেবে প্রায় ৪০ কোটি দেশবাসী।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গত এক বছরে এ নিয়ে তৃতীয়বার ধর্মঘট হতে চলেছে। করোনার কারণে বেশিরভাগ রাজ্যেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এখনও বন্ধ। ট্রেন-বাসও পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। তবে অফিসকাছারি, দোকান-বাজার বেশিরভাগই খুলে গিয়েছে। ধর্মঘটের জেরে সেখানে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হতে পারে আগামীকাল। ধর্মঘটে অংশ নিচ্ছে ব্যাঙ্ক এবং বিমার সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলি। ফলে সেখানে পরিষেবা নিয়ে কাল সমস্যা হতে পারে।
বাংলায় কাল প্রশাসন ধর্মঘট সম্পর্কে কী দৃষ্টিভঙ্গি নেবে? সরকারি ভাবে নবান্নের কর্তারা কোনও মন্তব্য করেননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, রাজ্য প্রশাসন জনজীবন স্বাভাবিক রাখার যাবতীয় চেষ্টা চালাবে। তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলেন, আমাদের দল বনধ, ধর্মঘটের বিপক্ষে।
সোমবারের ধর্মঘটের ইস্যুগুলির প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। দল কোথাও ধর্মঘটীদের সঙ্গে সংঘাতে যাবে না। তবে প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে।
ধর্মঘটের সপক্ষে সিপিএম নেতা হান্নান মোল্লা বলেন, সোমবার শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুরেরা সব রাস্তায় থাকবেন। সকাল ৬’টা থেকে রেল, রাস্তা অবরোধ শুরু হবে। দিল্লিতে যন্তরমম্তর থেকে শুরু হবে সংসদ অভিমুখে অভিযান। কলকাতায় ট্রেড ইউনিয়নের উদ্যোগে এন্টালি মার্কেট থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত মিছিল হবে। তিন কৃষি আইন, বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল ইত্যাদি বাতিল এবং জিনিসপত্রের দাম কমানোর দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকাল থেকে ৬টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। সংগঠন জানিয়েছে, এই সময়ে বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকান, শিল্পক্ষেত্রে সহ সরকারিক্ষেত্র বন্ধ থাকবে। হাসপাতাল, মেডিকেল স্টোর, ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ সহ জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে পঞ্জাব, হরিয়ানা এবং পশ্চিম উত্তর প্রদেশের কৃষকরা গত বছরের নভেম্বর থেকে দিল্লি সীমান্তে বিক্ষোভ করছেন। তাঁদের মূল দাবি কৃষকদের আশঙ্কা, তিন কৃষি আইনের ফলে ন্যূনতম সহায়কমূল্য আর থাকবে না। কৃষি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করবে বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যে কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দশ দফায় বৈঠক হয়েছে কৃষক সংগঠনের। কখনও কৃষক আন্দোলনে জেরে উত্তাল হয়েছে রাজধানী। কিন্তু মেলেনি সুরাহা। তাই ফের আন্দোলনের পথে কৃষকরা।