মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, দিওয়ালিতে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি পো়ড়ানো যাবে এবং বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষে রাত পৌনে বারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। কম ধোঁয়া ছড়ানো এবং নির্দিষ্ট শব্দমাত্রার বাজি বিক্রি করা যাবে। অনলাইনে বাজি বিক্রি বন্ধ করতে বলা হয়েছে এবং কোনও এলাকায় নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হলে তার দায় সংশ্লিষ্ট থানার ওসির উপরে বর্তাবে। প্রশ্ন উঠেছে, যে রাজ্যে এমন বেআইনি বাজি কারখানা থাকতে পারে, সেখানে সু্প্রিম কোর্টের এ দিনের নির্দেশ কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ২০১২ সালে বেআইনি বাজি কারখানা নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা করেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে জানা গিয়েছিল কয়েক হাজার বাজি কারখানার মাত্র তিনটির ছা়ড়পত্র রয়েছে। পরে তা বেড়ে চব্বিশে দাঁড়িয়েছে।’’ দূষণ এবং নির্দিষ্ট সময়ের শর্ত মেনে আতসবাজি পোড়ানোর পক্ষে রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং অশোক ভূষণের বেঞ্চ মঙ্গলবারের রায়ে জানিয়েছে, দীপাবলিতে রাত ৮টা থেকে ১০ পর্যন্ত কম মাত্রার দূষণকারী আতসবাজি পোড়ানো যাবে। শব্দবাজির মাত্রা কম ডেসিব্লের মধ্যে থাকতে হবে। বাজি কিনতে হবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিক্রেতার কাছ থেকেই। অনলাইনে আতসবাজি বিক্রি করা যাবে না। যে কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ বহাল থাকবে। বাজি কারখানাগুলিকে কম দূষণমাত্রার বাজি তৈরির নির্দেশ দিতে এবং বাজিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিকের ব্যবহার রুখতে কারখানাগুলিতে নিয়মিত নজরদারি চালাতে কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়া বর্ষবরণের রাতে রাত ১১.৫৫ মিনিট থেকে ভোররাত ১২.৩০টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। বায়ুদূষণ রোধে আতসবাজি তৈরি এবং বিক্রির বিরোধিতায় মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। গত ২৮ অগাস্ট রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, তাদের দু’পক্ষের অবস্থানই শুনতে হবে। কারণ সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা বা বাঁচার অধিকার সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আতসবাজির ফলে বায়ুদূষণের জন্য দেশের ১.৩ বিলিয়ন মানুষের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করতে হবে, তেমনই এই আতসবাজি শিল্পের সঙ্গে যে সব মানুষের জীবিকা জড়িত, তাঁদের কথাও মাথায় রাখতে হবে। দু’পক্ষের কথা শোনার পরই মঙ্গলবার এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। যদিও এই রায়ে আশার আলো দেখছেন অনেকে। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাসিন্দা অশোক ঘোষ, বলেন,প্রতিবছর হাবড়ার মানুষ বাজির শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে যান, আশা করছি প্রশাসন এ বার লক্ষ্মী পুজো সহ কালীপুজো ও দিওয়ালিতে আতসবাজি ও শব্দবাজিকে নিয়ন্ত্রন করে সাধারন মানুষকে স্বস্থিতে রাখতে সক্ষম হবে। আবার অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন ,আদেও নতুন নির্দেশে বাজির দাপট’কে কোণঠাসা করতে পারবে কি পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসন? সেটাই দেখার।