দেশের সময়, বনগাঁ: বিজেপির টিকিটেই ভোটে লড়াই করেছিলেন মুকুল রায়। নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর থেকে জয়ীও হন তিনি। কিন্তু এরপরই কলকাতার তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগদান করেন। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতির অন্দরে।
শুধু রাজ্য কেন, দিল্লি বিজেপির দোরেও সেই আঁচ পৌঁছয়। একটা বছর ধরে এই মুকুলকে নিয়ে তোলপাড় চলছে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অন্দরেও। এরইমধ্যে শুক্রবার বিজেপির এক অনুষ্ঠান থেকে মুকুল রায়কে বিতর্কিত ভাষায় কটাক্ষ করতে শোনা গেল আরেক বনগাঁ উত্তরের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়াকে।
মুকুল রায়কে ‘লাথখোর’ বলে আক্রমণ করেন তিনি। পাল্টা খোঁচা দিতে ছাড়েনি তৃণমূলও। তাদের বক্তব্য, এ ধরনের বিধায়কের নাম নিতেও ‘ঘেন্না’ লাগে।শুক্রবার বনগাঁ-১ নম্বর রেলগেট থেকে নীলদর্পণ প্রেক্ষাগৃহ পর্যন্ত একটি মিছিল ছিল বিজেপির।
এরপরই একটি পথসভা করে তারা। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই মঞ্চেই বক্তব্য রাখতে উঠে বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনীয়াকে বর্তমান সরকারের তীব্র সমালোচনা করতে শোনা যায়। তিনি বলেন, কেন্দ্র টাকা দেবে অথচ তার হিসাব সরকার দেবে না, তা কোনওমতেই মেনে নেওয়া হবে না।
তারই রেশ ধরে অশোক কীর্তনিয়া বলেন, “কেন্দ্রের পয়সায় মাতব্বরি করবে তা মানা হবে না। হিসাব দিলে টাকা ঘরে পৌঁছে দেবে। হিসাব দিতে না পারলে টাকাও দেওয়া হবে না। এই যে পিএসির (পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি) চেয়ারম্যান পদ মুকুল রায়কে দেওয়া হয়েছে, কারণ, এই পিএসির মাধ্যমে কেন্দ্র কী টাকা দেয় তা সকলে জানতে পারত।
সে কারণেই লাথখোর তৃণমূল নেতা মুকুল রায়কে দেওয়া হয়েছে। মুকুল রায় নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ভারতীয় জনতা পার্টিতে এসেছিলেন। কিন্তু এখানে লাভ করতে পারেনি। তাই তৃণমূলে ফিরে গিয়েছে।”
সরকারের সমালোচনা করতে গিয়ে কীভাবে একজন বিধায়ক এ ধরনের মন্তব্য করলেন তা নিয়ে তুমুল নিন্দার ঝড় উঠেছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, রাজনীতিকদের একাংশের মুখের আগল যে কতটা ঢিলেঢালা, এর আগেও শাসক-বিরোধী নির্বিশেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলই নমুনা রেখেছে।
যদিও বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়কের এই বক্তব্যকে দল সমর্থন করে না বলেই জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাঁর দাবি, এটা বিধায়কের ব্যক্তিগত বক্তব্য। বিজেপি এই ধরনের কথা সমর্থন করে না।
বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি গোপাল শেঠ বলেন, “বিজেপি বিধায়কের নাম বলতে আমাদের খারাপ লাগে, আমাদের ঘেন্না হয়। এমন একজন মানুষ বনগাঁ থেকে বিধানসভায় গিয়েছেন ভাবলে লজ্জা লাগে।”