দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আরও দু’সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন। শুক্রবার বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করা হল এই সিদ্ধান্ত। আপাতত ১৭ মে পর্যন্ত চলবে দেশজোড়া এই লকডাউন। সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতি ও তার জেরে চলা লকডাউনের. সামগ্রিক পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জারি করা এই প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, এই দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি বিচার করে দেখা গিয়েছে, এই লকডাউনের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কোভিড মোকাবিলায়। তাই ভারত সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫ অনুসারে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশজুড়ে চিহ্নিত করা রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জ়োনের কোথায় কতটা ঝুঁকি রয়েছে, কীভাবে চলতে হবে, কী করতে হবে, কীসে কীসে নিষেধাজ্ঞা, সেই অনুযায়ী কী ব্যবস্থা করতে হবে সেই সংক্রান্ত একটা গাইডলাইনও প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া লকডাউন চলাকালীন অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনে কী কী বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে তার উল্লেখও রয়েছে এই গাইডলাইনে।
এই প্রেস রিলিজে বলা হয়েছে, কী ভাবে দেশে রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোন চিহ্নিত করা হবে তার পদ্ধতি ৩০ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক প্রকাশ করেছে। যেসব জেলায় এখনও অবধি কোনও করোনা সংকারমিতের খোঁজ পাওয়া যায়নি, অথবা গত ২১ দিন ধরে কোনও সংক্রমণের খবর নেই, সেইসব জেলাকে গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোন চিহ্নিত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা, আক্রান্তের ডাবলিং রেট, নমুনা পরীক্ষার পরিমাণ, পর্যবেক্ষণের দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। আর যে জেলাগুলি রেড ও গ্রিন জোন নয়, সেগুলিকে অরেঞ্জ জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
কেন্দ্রের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে এই রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোন নিয়ে আলোচনা করবে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। রাজ্যগুলি মনে করলে কেন্দ্রের চিহ্নিতিকরণের পরেও রেড অথবা অরেঞ্জ জোনের সংখ্যা বাড়াতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রের দ্বারা চিহ্নিত রেড ও অরেঞ্জ জোনের সংখ্যা কখনও কমাতে পারবে না রাজ্যগুলি।
প্রেস রিলিজে কেন্দ্র জানিয়েছে, অনেক জেলায় একাধিক পৌরসভা এলাকা থাকে। পৌরসভা এলাকাতে জনঘনত্ব বেশি থাকায় সংক্রমণের পরিমাণ বেশি হতে পারে। এইরকম অবস্থায় রাজ্যগুলি চাইলে এই জেলাগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করতে পারে। পৌরসভা এলাকার ভিতরের অংশ ও পৌরসভা এলাকার বাইরের অংশ। এই জেলা যদি রেড জোনের আওতায় থাকে আর যদি পৌরসভা এলাকার বাইরের অংশে ২১ দিন ধরে নতুন সংক্রমণের খবর না পাওয়া যায়, তাহলে বাইরের অংশকে অরেঞ্জ জোনের আওতায় ফেলা যেতে পারে। তাহলে সেখানে অতিরিক্ত কিছু ছাড় দেওয়া সম্ভব হবে।
কন্টেইনমেন্ট জোনের আওতায় থাকা এলাকাগুলিতে বাড়ি বাড়ি পর্যবেক্ষণ ও কড়া হাতে লকডাউন পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই এলাকার প্রতিটি মানুষের ফোনে যাতে আরোগ্য সেতু অ্যাপ ইনস্টল থাকে সেদিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় প্রশাসনকে।
এই নতুন গাইডলাইনে বলা হয়েছে, মানুষের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে জরুরি কাজ ছাড়া কেউ যেন সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত রাস্তায় না বের হন। স্থানীয় প্রশাসনকে এই সময় দরকার হলে কার্ফু জারি রাখার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ৬৫ বছরের বেশি বয়সের মানুষ, গর্ভবতী মহিলা ও ১০ বছরের কম বয়সের যেন কেউ দরকার ছাড়া বাড়ির বাইরে না বের হন, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।