রিষড়া প্রেম মন্দিরে অনুষ্ঠিত হল বাঙালির আত্ম-জাগরণ সভা

0
108

অসীমলাল মুখার্জি  রিষড়া, হুগলী: রিষড়া ‘প্রেম মন্দির আশ্রম’-এ বাঙালির আত্ম-জাগরণ নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হল গত ১৫ই জুন, ২০২৪, সন্ধ্যাবেলায়। আলোচনার শিরোনাম ‘সমকালের নিরিখে বাঙালির আত্ম-জাগরণ এবং বাঙলার পত্রপত্রিকার ভূমিকা’। সভার আয়োজক ‘স্বদেশি বার্তা’ সাহিত্য পত্রিকা এবং ‘প্রেমপ্রবাহ’ ত্রৈমাসিক পত্রিকার পরিচালকবৃন্দ। সাংস্কৃতিক সহযোগিতায় ছিল ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’।

এই আলোচনা চক্রে উপস্থিত ছিলেন রিষড়া ‘প্রেম মন্দির’ আশ্রমের সম্পাদক শ্রীমৎ নির্গুণানন্দ ব্রহ্মচারী মহারাজ, মহানাম সম্প্রদায়ের সম্পাদক শ্রীমৎ বন্ধুগৌরব ব্রহ্মচারী মহারাজ, ‘স্বদেশী বার্তা’র প্রকাশক কৃষ্ণেন্দু মুখার্জি, ‘স্বদেশী বার্তা’-র সম্পাদক সৈকত চ্যাটার্জি, ‘প্রেম প্রবাহ’ পত্রিকা সম্পাদক ড. শতরূপা চ্যাটার্জি, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও অধ্যাপক (ড.) কল্যাণ চক্রবর্তী, প্রাবন্ধিক ড. রাকেশ দাশ, প্রাবন্ধিক অরিত্র ঘোষ দস্তিদার, ‘দেশের ডাক’ পত্রিকার কার্যনির্বাহী সম্পাদক সঞ্জয় পাল, ‘স্বস্তিকা’ পত্রিকার কার্যনির্বাহী সদস্য অংশুমান গঙ্গোপাধ্যায়, সমাজসেবী ভরত কুন্ডু এবং ‘দেশের মাটি কল্যাণ মন্দির’-এর সদস্য মিলন খামারিয়া প্রমুখ ব্যক্তিগণ।

অনুষ্ঠানের শুরু হয় বৈদিক মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে। ‘ঈশোপনিষদ’ পাঠ করে শোনান আশ্রমিক সুপ্রতিম চক্রবর্তী। তারপর একে একে উপস্থিত অতিথিদের বরণ করে নেওয়া হয় তিলক, উত্তরীয় ও চারাগাছ দিয়ে। অয়ন নাগা নির্গুণানন্দজী মহারাজকে তাঁর নিজের হাতে তৈরি রাধা-কৃষ্ণের বাঁধানো ছবি তুলে দেন। স্বাগত ভাষণ দেন সৈকত চ্যাটার্জি।

নির্গুণানন্দজী বলেন,”রাজ গুরুর ভূমিকায় মহারাজরা আজীবন ধরেই তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু বর্তমান কালের কিছু শাসক সাধু-সন্ন্যাসীদের বিভিন্ন ভাবে আক্রমণ করছেন। এটা করে তারা ভারতীয় পরম্পরাকে অসম্মান করছেন,তা আমরা লক্ষ্য করছি।”

বন্ধুগৌরব মহারাজ বলেন, “শাসকরা আজ যথার্থ সাংবাদিক ও সম্পাদকের কন্ঠরোধ করার চেষ্টা করছেন। হলুদ সাংবাদিকতাও চলছে পাশাপাশি, যা সমাজের প্রকৃত সত্যকে তুলে ধরছে না। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।”

ড. শতরূপা চ্যাটার্জি বলেন,”আমাদের পত্রিকায় ভারতীয় সংস্কৃতি ও ইতিহাস চর্চার পাশাপাশি বিজ্ঞানের আলোচনাও করা হয়ে থাকে। ভারতীয় ঋষিরা গণিত ও বিজ্ঞানে ভীষণ দক্ষ ছিলেন, আমরা সঠিক ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখেছি।”

সমাজসেবী অধ্যাপক কল্যাণ চক্রবর্তী সভায় ব্যাখ্যা করেন বাঙ্গালির অতীত গৌরব এবং তাদের চরিত্রের অবনমনের চিত্র যা রবীন্দ্রনাথ, সুকুমার রায় প্রমুখ মনীষীদের কবিতায় একদা ফুটে উঠেছে। তিনি ‘সমকাল’ কথাটির ব্যাখ্যা করেন এবং এই সময়ে সংঘটিত বাঙ্গলার নানান অনভিপ্রেত পরিস্থিতির উদাহরণ দেন। আগামী দিনে ছোটো ও মাঝারি পত্রিকা কীভাবে সত্যপ্রকাশ করতে পারে, সোশ্যাল মিডিয়া অবদান রাখতে পারে, তা ব্যাখ্যা করেন।

প্রকাশক ও সমাজসেবী কৃষ্ণেন্দু মুখার্জি বলেন, “বাঙালি জাতির আত্ম-জাগরণ ঘটাতে গেলে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাকে যথাযথ ভূমিকা নিতে হবে। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল। ‘স্বদেশী বার্তা’ পত্রিকার পক্ষ থেকে বিভিন্ন জেলায় এমন সভা আরও আয়োজন করা হবে।”

অনুষ্ঠানে রাখা হয়েছিল প্রশ্নোত্তর পর্ব। সমকালে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা কীভাবে কাজ করছে সেই নিয়ে আলোচনা। সাংবাদিকরা অনেক সময় শাসকের অঙ্গুলিহেলনে সঠিক ভাবে সাংবাদিকতা করছেন না — সেটাও আলোচনায় উঠে আসে। পাশাপাশি বিভিন্ন ছোটো ছোটো পত্রিকা ও পোর্টাল গুলো শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেও বাঙালির বীরত্বের ইতিহাস ও বর্তমান সময়ে বিশ্বের মঞ্চে সম্মানিত হওয়াকে যথাযথভাবে তুলে ধরছে বলেও আলোচনায় উঠে আসে।

অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন গৌতম বর্মন, সুমন রায়, ধ্রুবজ্যোতি পাল ও সঞ্চালনায় ছিলেন মিলন খামারিয়া।

Previous articlePantavat পান্তাভাত শুধু কৃষকের খাবার নয়, পান্তার প্রেমে পড়েছিলেন বাংলার প্রথম গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংসও
Next articlePOETRYকোলকাতা ষোলোকলায়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here