‘রিজাইনমোদী’ ব্লক করেছিল ফেসবুক, প্রবল সমালোচনার মুখে ‘ভুলবশত হয়েছে’ বলে পরে দাবি ফেসবুকের

0
388

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। হ্যাশট্যাগ ‘রিজাইনমোদী’ ট্রেন্ডিং হয়ে গেছিল গত ৪৮ ঘণ্টায়। কিন্তু এর পরেই দেখা যায়, ওই নির্দিষ্ট হ্যাশট্যাগটিকে ব্লক করে দেয় ফেসবুক। গতকাল, বুধবার ফেসবুকের ওই পদক্ষেপের পরে শুরু হয় সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। অবশেষে আজ, সকালে সেই ব্লক তুলে নিল ফেসবুক। শুধু তাই নয়, ফেসবুক জানাল, কেন্দ্রের নির্দেশে তারা এমনটা করেনি। পুরো ব্যাপারটাই নাকি ‘ভুলবশত’ হয়েছে।

গতকাল ফেসবুক ওই হ্যাশট্যাগ ব্লক করার পরেই কাল অভিযোগ উঠেছিল, কেন্দ্রের নির্দেশেই এমনটা করেছে ফেসবুক। বস্তুত, অনেকে বলেন, নরেন্দ্র মোদীর ভাল বন্ধু জুকারবার্গ। তাই দেখা যায় কখনও ‘ভুল করে’ বিজেপি নেতাকে শায়েস্তা করতে ভুলে যায় ফেসবুক, কখনও আবার ‘ভুল করেই’ রিজাইন মোদী হ্যাশট্যাগ ব্লক করে দেওয়া হয়!


সে যাই হোক, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভারতে হু হু করে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশে মারা যাচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। শ্মশানে জ্বলছে রীতিমতো গণচিতা। ভারতকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে ব্রিটেন, রাশিয়ার মতো দেশগুলি। অক্সিজেন তৈরির সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে এ দেশে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাজধানী দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে সরবরাহ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। টান পড়েছে ভ্যাকসিনেও।

অসংখ্য হাসপাতালে বেড নেই, অক্সিজেনের সরবরাহ নেই। রীতিমতো ধুঁকছে বহু করোনা রোগী। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলছে বিরোধীরা। এমন অবস্থাতেও প্রধানমন্ত্রী ভোটের জন্য জনসভা করছেন‌ কী করে, এমন অভিযোগ জানাতে থাকে বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গেই হ্যাশট্যাগ ‘রিজাইনমোদী’ ব্যবহার করে টুইটার, ফেসবুকে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বিরোধীরা। তাতে ধীরে ধীরে যোগ দেন সাধারণ নেটিজেনরাও।

এটি ছড়িয়ে পড়তেই এর কিছু পরেই #রিজাইনমোদী দিয়ে কিছু লেখা পোস্ট করতে গেলেই সেটি ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে বলে বার্তা ভেসে ওঠে। শুধু তাই নয়, ওই হ্যাশট্যাগ দেওয়া সমস্ত পোস্টও সরিয়ে নেওয়া হয়। বলা হয়, ওই হ্যাশট্যাগ ফেসবুকের নীতির পরিপন্থী। তার জেরে বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য ওই হ্যাশট্যাগ দেওয়া কোনও লেখা পড়া যাচ্ছিল না।

শেষমেশ ট্যাগ ব্লক করেও আজ ফের তুলে দিল ফেসবুক। ফেসবুকের এক মুখপাত্রের কথায়, ‘‘আমরা ভুলবশত সাময়িক ভাবে ব্লক করেছিলাম হ্যাশট্যাগটি। এবং সেটা ভারত সরকারের কোনও নির্দেশের কারণে নয়। অবশেষে সেই ব্লক তুলেও নেওয়া হয়েছে।’’

কিন্তু ফেসবুকের এই দাবিও ধোপে টিকছে না অনেকের কাছেই। কারণ অতিমারি পরিস্থিতিতে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার মোদী সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে এমন লেখা নেটমাধ্যম থেকে তুলে নেওয়া হল। এর আগে, কোভিড সঙ্কট সামাল দেওয়ায় সরকারি ব্যর্থতা নিয়ে মুখ খোলায় পশ্চিমবঙ্গের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, সাংসদ রেবানাথ রেড্ডি, অভিনেতা বিনীতকুমার সিংহ, চিত্র নির্মাতা বিনোদ কাপরি এবং অবিনাশ দাসের হ্যান্ডলের মতো একাধিক বিশিষ্ট মানুষের টুইট তুলে নেওয়া হয়। জানা যায়, গত ২২ এবং ২৩ এপ্রিল ওই টুইটগুলি নিষিদ্ধ করতে টুইটার কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। সেই মতো পদক্ষেপ করেন মাইক্রোব্লগিং সাইট কর্তৃপক্ষ।

তবে সরকারি অঙ্গুলিহেলনে কাজ করার অভিযোগ ফেসবুকের বিরুদ্ধে এই প্রথম নয়। বরং ঘৃণা ভাষণ ছড়ানো হোক বা বিদ্বেষমূলক পোস্ট, বিজেপি নেতাদের প্রতি ফেসবুক বিশেষ ‘সদয়’ বলে গত বছর সামনে এনেছিল আমেরিকার দৈনিক সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সেই নিয়ে সংসদীয় কমিটির সামনে হাজিরা দিতে হয় তৎকালীন ভারতে ফেসবুকে নীতি নির্ধারণ বিভাগের প্রধান আঁখি দাসকে। বিতর্কের জেরে শেষমেশ অক্টোবরে ফেসবুক থেকে পদত্যাগ করেন আঁখি।

Previous articleভয়ঙ্কর! দেশে ১ দিনে করোনার বলি প্রায় ৪ হাজার, ভ্যাকসিন নিতে এক দিনেই রেজিস্ট্রেশন কোটি ছাড়াল
Next articleকরোনা মোকাবিলায় ভারতের পাশেই রয়েছে বাংলাদেশ, ওষুধ পাঠাচ্ছে হাসিনা সরকার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here