দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ ভোজন রসিক বাঙালির পাতে ইলিশ যেন আলাদা মাধুর্যের নাম। আর সেই ইলিশ যদি পদ্মার হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান। অনেক টালবাহানার পর রাজ্যে এল পদ্মার ইলিশ।
অবশেষে সোমবার সন্ধ্যায় পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে দু’টি ট্রাকে পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ল পদ্মার ইলিশ। আগামী কয়েক দিন ধরে একই ভাবে ইলিশ ঢুকবে। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ইলিশ এসেছে ১২ মেট্রিক টন। এ রাজ্যে মূলত পদ্মা-মেঘনার মোহনা বরিশালের ভোলা মনপুরা পাথরঘাটা চাঁদপুর থেকে ইলিশ আসে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকার ওই দেশের ইলিশ রফতানিকারকদের ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দেয়। মোট ১৪৫০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী বাজারে আসার কথা। আপাতত এল ২০ মেট্রিক টন। মঙ্গলবার সকালেও বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে এল এই রুপোলি ইলিশ। পুজোর আগেই সীমান্ত পেরিয়ে পদ্মার ইলিশ ঢোকায় ইলিশের আক্ষেপ কিছুটা অন্তত কমবে বলে মনে করছেন মাছ ব্যাবসায়ীরা। আর ভোজন রসিক বাঙালি অবশ্যই আপ্লুত, এটাতো নিঃসন্দেহে বলাই যায়।
এদিন হাওড়া হোলসেল ফিস মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ জানিয়েছেন,২০ মেট্রিক টন ইলিশ সীমান্ত পেরিয়ে ট্রাক বোঝাই হয়ে ঢোকে হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারে। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে পদ্মার বাকি পরিমাণ ইলিশ ঢুকবে যাবে। গতবারের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে অনেক বেশি পরিমাণ পদ্মার ইলিশ এখানকার বাজারে আসবে। তিনি বলেন, ‘‘৮০০ থেকে ১২০০ গ্রাম পর্যন্ত মাছের পাইকারি বাজারে দাম হতে পারে আটশো থেকে হাজার টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে এই দাম আরও একটু বেশি হবে।’’
তিস্তার জল বণ্টন নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রাজনৈতিক টানাপড়েনের কারণে বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ সরকার ভারতে ইলিশ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তবে গত বছর রাজ্য সরকারের অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানি করেছিল। এই বছর ওই দেশের সরকার প্রায় তিন গুণ ইলিশ রফতানির অনুমতি দেওয়ায় খুশি হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘ইলিশ ঢুকল রান্না পুজোর আগে। দুর্গাপুজোর সময়ও জারি থাকবে ইলিশের রফতানি। করোনার দাপটে ম্রিয়মান পুজো মিষ্টি জলের সুস্বাদু ইলিশে খানিকটা হলেও প্রাণ পাবে।’’
এদিকে পাইকারি বাজারে পদ্মার ইলিশ এসেছে সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেই মঙ্গলবার সকালে বনগাঁর ট’ বাজারে খুচরো ক্রেতারাও অনেকেই চলে আসেন। তেমনই একজন কার্তিক মজুমদার বলেন, ‘‘এ বার মোটে ইলিশ পাইনি। তাই পদ্মার ইলিশ এসেছে শুনেই চলে এসেছি। দাম দর দেখতে।কিন্তু এখানে কোন পদ্মার ইলিশ নেই সবই কোলাঘাট ও সুন্দরবন এলাকার ইলিশ,আশা রাখছি বাজারে তো আসবেই। দুর্গা পুজোয় ১টা বাংলার ইলিশ এবারতখন কিনবই।’’