দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মাদক-সহ বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী গ্রেফতার হওয়ার পরেই নাম জড়ায় আর এক বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের। পামেলা অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ঘনিষ্ঠ রাকেশ তাঁকে ফাঁসিয়েছেন। এরপরেই মঙ্গলবার বিকেল ৪টের মধ্যে তাঁকে লালবাজারে হাজিরা দেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করেছে হাইকোর্ট। আজই রাকেশকে হাজিরা দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। এদিকে রাকেশ সিংয়ের আলিপুরের বাড়ির বাইরে জড়ো হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।
বিজেপি নেতা রাকেশ সিংয়ের বাড়িতে পুলিশ বাহিনীকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পুলিশকে ভেতরে প্রবেশে বাধা দেন রাকেশ সিংয়ের ছেলে। তাঁর বক্তব্য, শুধু রাকেশ সিংয়ের নয়, এটি তাঁরও বাড়ি। তাই বেআইনিভাবে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। অভিযোগ, বৈধ নথি ছাড়াই জোর করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে পুলিশ। পালটা পুলিশের দাবি, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। দু’পক্ষের বচসায় বুধবার উত্তেজনা ছড়ায় নিউ আলিপুর এলাকায়।
পামেলা গোস্বামী মাদক মামলায় মঙ্গলবার বিকেল চারটের সময় বিজেপি নেতাকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেয় পুলিশ। কিন্তু, রাকেশ সিংয়ের তরফে হাজিরার জন্য সময় চাওয়া হয়। তাঁর ছেলের প্রশ্ন, পুলিশকে জানানোর পরও কেন বিশাল বাহিনী এসে উপস্থিত হয়েছে? তাঁর আরও অভিযোগ, দরজা ভাঙার সরঞ্জাম নিয়ে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ তাঁদের বাড়ির সামনে চড়াও হয়েছে। রাকেশ সিংয়ের বাড়ির সামনেই ছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরাও।
রাকেশের ছেলে সাহেব সিং আরও জানিয়েছেন, তাঁর বাবা দিল্লিতে গিয়েছেন। পুলিশ কী কারণে বাড়ির ভিতরে ঢুকে তদন্ত করতে চাইছে সেই বিষয়ে কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। তারা কাগজ দেখালে তবেই বাড়ির ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে। তাঁর বাড়িতে কর্মরত তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেও অভিযোগ সাহেবের।
অন্যদিকে, এদিন হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। লালবাজারের নোটিশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দিল না আদালত। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশ যা করছে আইন মেনেই করেছে। গ্রেফতারি এড়াতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাকেশ সিং।
গত শুক্রবার কোকেন সহ বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী পামেলা গোস্বামীকে গ্রেফতার করেছিল নিউ আলিপুর থানার পুলিস। পরদিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে রাকেশ সিংয়ের নাম নেন পামেলা। তিনি বলেন, কৈলাস বিজয়বর্গীয় ঘনিষ্ঠ এই নেতাকে গ্রেফতার করা হোক। এরপর থেকেই বিতর্ক তৈরি হয় রাকেশ সিংকে কেন্দ্র করে। তিনি জানান, বহুদিন পামেলার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল নেই তাঁর। কলকাতা পুলিশকে এই নিয়ে চিঠিও দিয়েছেন রাকেশ।
অন্যদিকে পুলিশের অভিযোগ তাদের তদন্তে বাধা দেওয়া হচ্ছে। নিউ আলিপুর থানায় থানায় দায়ের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়েছে তারা। কিন্তু সিআইএসএফ আধিকারিকরা গেটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পুলিশ। সব মিলিয়ে রাকেশের বাড়ির বাইরে এখনও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে।
এদিকে এদিন সকালেই রাকেশ ইমেল করে লালবাজারকে জানিয়েছেন, আজ তিনি হাজিরা দিতে পারছেন না। কারণ মঙ্গলবার ও বুধবার দিল্লিতে জরুরি কাজ রয়েছে তাঁর। বৃহস্পতিবারের পরে কোনও দিন তাঁকে ডাকা হলে তাঁর যেতে কোনও অসুবিধা নেই বলেই জানিয়েছেন রাকেশ। অবশ্য এই হাজিরা প্রসঙ্গে একটি আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন বিজেপি নেতা রাকেশ সিং। তিনি বলেন, তাঁর প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। তাই হাজিরা দেওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে তাঁর আইনজীবী ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর একজন দেহরক্ষীও থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।