দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা ভ্যাকসিন বিনামূল্যে রাজ্যবাসীকে দিতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছিলেন। তাঁর লেখা চিঠির উত্তর না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার বাঁকুড়ার ছাতনায় তিনি বলেন, ‘ভোট ঘোষণার আগেই আমি চিঠি লিখেছিলাম, সবাইকে ইঞ্জেকশনটা দেওয়া হোক। এখনও অনুমতি দেয়নি। ১০ কোটি লোকের মধ্যে যদি ৩ লাখ লোক ভ্যাকসিন পায় আর বাকিরা না পায়, তাতে সমস্যা হবে। আমরা দাম দিয়ে দেব বলছি, তারপরেও সেটা করল না।’ তাঁর অভিযোগ, এরা শুধু দাঙ্গা লাগায়। তিনি বলেন, ‘কোভিডের সময় আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছি। এরা কোথায় ছিল! কোভিডের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য একটা টাকা দেয়নি। আমি তাঁদের জন্য ৩০০ ট্রেন ভাড়া করে সবাইকে নিয়ে এসেছি।’
ফেব্রুয়ারি মাসে মোদীকে দেওয়া চিঠিতে মমতা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে টিকা দিতে চায় তাঁর সরকার। সে জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়া হোক। ভোটের আগে রাজ্যবাসীর টিকাকরণ প্রয়োজনীয় বলেও উল্লেখ করা হয়েছিল চিঠিতে। চিঠির মাধ্যমে মমতা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ কর্মী, পুর কর্মী সহ প্রথমসারির করোনা যোদ্ধাদের টিকাকরণের কাজ চলছে। রাজ্যে সামনেই ভোট, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী এবং সরকার পোষিত সংস্থার কর্মীদের অবিলম্বে টিকাকরণের প্রয়োজন রয়েছে। যাতে কোভিডের চোখ রাঙানি ছাড়াই ভোট পর্ব সম্পন্ন করা যায়। টিকাকরণ ছাড়াই সাধারণ মানুষ এবং যাঁরা ভোটের দায়িত্বে সামলাবেন তাঁদের এগোতে দেওয়া কাম্য হবে না বলেই মত মুখ্যমন্ত্রীর। চিঠিতে তাঁর আবেদন ছিল, রাজ্যকে সহযোগিতা করা হোক, যাতে দ্রুত টিকা কিনতে পারে বাংলা। এদিন সেই প্রসঙ্গই তুলে আনেন মমতা।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১০ হাজার দৈনিক সংক্রমণ থেকে আচমকা এক লাফে গোটা দেশে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ২৬ হাজারেরও কোটায়। ৮৫ দিনে সর্বোচ্চ। সঙ্কটপূর্ণ পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটায় সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে এদিন এই নিয়ে সরব হলেন মমতা। মেজিয়া, ছাতনা,রাইপুরের জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় মোট তিনটি জনসভা ছিল তৃণমূল নেত্রীর। বাঁকুড়ার সভাতেই তিনি মন্তব্য করেছেন, অমিত শাহ হারবে বলে বাংলায় বসে চক্রান্ত করছে। ভাঙা পা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে ধর্না দেব।
বাঁকুড়ার সভা থেকে প্রথমেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, কলকাতায় বসে চক্রান্ত করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচন কমিশন কে চালাচ্ছেন? অমিত শাহ চালাচ্ছেন না তো? কেন কমিশনের কাজে হস্তক্ষেপ করছেন তিনি! মমতা বলেন, ‘হোম মিনিস্টার দেশ চালাবেন। তা না করে কলকাতায় বসে চক্রান্ত করছেন, কোথায় কাকে গ্রেফতার করা হবে। শিল্পপতিদের ঘরে ঘরে রেইড করা হচ্ছে। কী ভাবেন অমিত শাহ নিজেকে?’ তাঁর অভিযোগ, নন্দীগ্রামের আন্দোলনকারীদের বেছে বেছে নোটিস দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনকে দেখতে বলব, কেন এই সময় সরকারি আধিকারিক, রাজনৈতিক নেতাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যের প্রতিদিনের কাজেও হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁর। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে এদিন নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।