দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বহিরাগতদের বাংলা মানবে না। বাংলার জাতীয়তাবোধ কেউ যদি ধ্বংস করতে চায়, তার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ হবে।
বৃহস্পতিবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করার আগে সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাঁকুড়ায় দলীয় বৈঠক, সভা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাঁকুড়ায় তিনি কেন্দ্রীয় পুলিশকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন, অথচ রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন না। এর পেছনে কী আছে, আপানারাই বলবেন। কেউ কেউ জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের ধমকাচ্ছেন। তাঁদের বলা হচ্ছে, কেন তাঁরা এফআইআর নিচ্ছেন? অফিসারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বদলি করার হুমকি দিচ্ছেন। রাজীব কুমারের স্ত্রীকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। আমি পরিষ্কার বলছি, জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা, কোনও চিন্তা করবেন না। আপনারা নির্ভয়ে নিজেদের কাজ করবেন। আপনারা আমাদের সরকারের হয়ে কাজ করছেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
নাম না করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কে কী বলছেন সে–সব কথায় কান দেবেন না। ভদ্রতা রক্ষা করে কাজ করবেন। লক্ষ্মণের সীমারেখা আমরা কিন্তু অতিক্রম করি না। আমিও ভাল হিন্দি বলতে পারি। অমিত শাহ বাংলায় এসে হিন্দিতে বলেছেন, আমাদের ছুড়ে ফেলে দেওয়া হবে। আমি যদি হিন্দিতে পাল্টা জবাব দিই, সেটা কি ভাল দেখাবে?’
রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে নাম না করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের যেন কেউ জ্ঞান দিতে না আসেন।’ বিজেপি–কে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘সবসময় এই দলটি বাংলার অপপ্রচার ও কুৎসা করছে। কোভিডের জন্য এক পয়সা দিল না। অশান্ত করার চেষ্টা করছে বাংলাকে। বাংলার জাতীয়তাবোধ আলাদা। সকলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে আমরা কাজ করি। স্কুলের প্রাথমিক স্তর থেকে ছাত্রছাত্রীদের জাতীয়তাবোধ সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয়।
মনীষীদের আমরা সম্মান করি। বিজেপি মনীষীদের অপমান করে। আমরা এটা সহ্য করব না।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুর্গাপুজো এবার ভালভাবে পালন করা হয়েছে। প্রত্যেকেই প্রশংসা করেছেন। আইন না মেনে মিটিং, মিছিল করে বিজেপি কোভিড আরও ছড়িয়ে দিচ্ছে। ওদের এত তাড়া কীসের? নির্বাচন তো দেরি আছে। মে, জুনের আগে তো নির্বাচন হচ্ছে না। সারা বছর এরা ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন জায়গায় মানুষকে এরা অসুবিধেয় ফেলছে। যেখানে আমাদের পুলিশ কাজ করছে, সেখানে কেন্দ্রের পুলিশ এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এটা আগে ছিল না।
আমরা নির্বাচিত সরকার। প্রত্যেকের সীমারেখা আলাদা। আমরা যেমন কেন্দ্রের কাজে হস্তক্ষেপ করি না, আশা করব কেন্দ্রও রাজ্যের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। তারা এ কাজ করতে পারে না।’ দুর্গাপুজো যেরকম শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে, কালীপুজো, ছটপুজোও তেমন শান্তিপূর্ণভাবে করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, অনেক রাজ্যই কোভিডের কোনও হিসেব রাখে না। কেন্দ্রের কাছেও তথ্য নেই। বাংলা সব তথ্য রাখে। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই আমরা কোভিড পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়েছি। ৪৭ লক্ষ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রেল চালু হলে স্যানিটাইজ ভাল করে করতে হবে। ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। না হলে গাদাগাদি করে সবাই ট্রেনে উঠবে।’