বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবি অমূলক নয়:অমিত শাহ

0
338

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি শাসনের মধ্যেই কি বাংলায় বিধানসভা ভোট হবে? এই নিয়ে জল্পনা বাংলার রাজনীতির সব শিবিরেই রয়েছে। শনিবাসরীয় সন্ধ্যায় এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ধুনুচিতে যেন ধুনো পড়ল!

এদিন একটি সর্বভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, “বাংলায় যে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা যে ভাবে ভেঙে পড়েছে, তাতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবি অমূলক নয়।”

বিজ্ঞাপন:

তখনই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে কি বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে চলেছে? জবাবে প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি পষ্টাপষ্টিই বলেন, “আমি তা কিন্তু বলিনি। কোথাও রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে কি হবে না তা নির্ধারণের একটি সাংবিধানিক পদ্ধতি রয়েছে। সেই রাজ্যের রাজ্যপালের রিপোর্টের ভিত্তিতে তা হয়”। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলার রাজ্যপাল যদি তেমন কোনও রিপোর্ট দেন, তা হলে সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনেই তা বিবেচনা করা হবে।

মাস খানেক আগেই কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে বাংলার পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় রাজ্যের ৩৫৬ ধারা জারি করার দাবি জানিয়েছিলেন। এদিনের সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন,”বাংলার প্রেক্ষিতে এই দাবি অযৌক্তিক নয়। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পরিস্থিতি বাংলায় তৈরি হয়েছে। কিন্তু কোনও নেতার কথায় তা হয় না। হলে সংবিধান মেনেই হবে।”

বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় বিরোধীদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে এদিন সে কথাও তুলে ধরতে চান অমিত শাহ। তিনি বেশ অসন্তোষের সঙ্গেই বলেন, “বিরোধীদের উপর নিধন যজ্ঞ চালাচ্ছে তৃণমূল। মিথ্যে মামলায় জেলে ঢোকাচ্ছে। বাংলায় সাংঘাতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।” তাঁর কথায়, “বাংলার জেলায় জেলায় বোমা বারুদের কারখানা তৈরি হয়েছে। দেশের কোনও রাজ্যে এই পরিস্থিতি নেই। আগে কেরলে এই পরিস্থিতি ছিল। তবে দক্ষিণের রাজ্যটিতেও এখন পরিস্থিতির অনেক বদল হয়েছে। কিন্তু বাংলায় জঙ্গলের রাজত্ব চলছে।”

সত্যিই কি রাষ্ট্রপতি শাসন অনিবার্য! যদি প্রশ্ন ওঠে ?

এর স্পষ্ট জবাব কারও পক্ষে এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, রাজনীতিতে কখন কী হয় ষোলো আনা পূর্বানুমান করা মুশকিল। তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকেরই ধারণা, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হবে না। অতীতে বাম জমানায় তৃণমূল বা কংগ্রেসও রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাত। কিন্তু তা বাস্তবে হোক, সেটা মনে মনে চাইত না। কারণ, সংশয় ছিল তাতে শাসক দল খামোখা সহানুভূতি পেয়ে যেতে পারে। বিজেপি নেতারাও এখন তাই করছেন। 

মুখে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির কথা বলছেন, কিন্তু আসল কৌশল তা নয়। কারণ, তাঁদের আশঙ্কা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করলে একে তো মমতা সহানুভূতি পেয়ে যেতে পারেন। তা ছাড়া তৃণমূলনেত্রীকে আবার বিরোধী নেত্রীর ভূমিকায় মাঠে নামার সুযোগ করে দেওয়া হবে। তুলনায় বুদ্ধিমত্তা হবে শাসক হিসাবে মমতার ভূমিকার সমালোচনা করে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার সুযোগ নেওয়া। সেই হাওয়া প্রবল করতে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি নিয়ে ধুনো দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু প্রকৃতই সংবিধানের ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা উচিত হবে না।

অমিত শাহের কথার প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, “বিজেপি এখন লাশ গোণার রাজনীতি করছে। টিবি, ক্যানসারে কেউ মারা গেলেও রাজনৈতিক হত্যা বলে রটিয়ে দিচ্ছে।” তাঁর কথায়, “সিপিএম জমানার চেয়ে মমতা জমানায় বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক ভাল। অমিত শাহ বরং উত্তরপ্রদেশ, গুজরাতে গিয়ে এসব কথা বলুন।”

Previous articleদেশের সময় / Desher Samay
Next articleকরোনা আক্রান্ত নির্মল মাজি ভর্তি হাসপাতালে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here