দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ রবিবার কলকাতা দক্ষিণ বেহালা এলাকা থেকে কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত তিন বাংলাদেশি জেএমবি জঙ্গির ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের।
আদালতে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, বেহালা থেকে ধৃত এই তিন জন এ রাজ্যে বোমা বানানোর ছক কষেছিল। এই তথ্য সামনে আসার পর খাগরাগড় কাণ্ড নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে পুলিশ মহলে। বর্ধমানের খাগরাগড়ে বোমা তৈরির উদ্যেশেই ঘাঁটি গেড়ে ছিল জঙ্গিরা। সেখানে যে কাজ অসমাপ্ত থেকে গিয়েছিল, তাই কি তাহলে আবার নতুন করে নতুন উদ্যমে শুরু করতে চাইছে জঙ্গিরা? খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
খাগরাগড় কাণ্ডেও দেখা গিয়েছিল, অভিযুক্তরা সাধারণ পেশার সঙ্গে যুক্ত। আড়ালে তারাই জড়ো হয়েছিল জঙ্গি নাশকতার প্রাথমিক উপাদান বোমা তৈরির কারখানা বানানোর উদ্দেশ্য নিয়ে।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দাদের কাছে খবর, শুধু এই তিন জনই নয়, জঙ্গিদের জাল পশ্চিমবঙ্গে আরও বেশ খানিকটা বিস্তৃত হয়েছে। আরও অন্তত ১৫-১৬জন জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতী পূবের সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে ভারতে। প্রত্যেকেই পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে, নাকি অন্য রাজেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছে তা পরিষ্কার নয়।
বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদীন পদ্মাপাড়ে বিশেষ সুবিধা করতে না পেরে গঙ্গা তীরে নজর দিয়েছে। এ রাজ্যে আবার সংগঠন পুনরুজ্জীবনের মতলবে রয়েছে তাদের। ঢাকার একটি জেলে বন্দি জঙ্গিদের মূল পাণ্ডা আল আমিন সকলের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অনুমান পুলিশের।
ধৃত তিন জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, তাদের মধ্যে অন্তত দুজন বাংলাদেশের জেলবন্দি ছিল। পরে জামিনে মুক্তি পেয়েছে। জেএমবি জঙ্গিদের অনেকেই জেল খাটার পর জামিন পেয়ে কাঁটাতার পেরিয়েছে বলে খবর।
কলকাতায় ধৃত তিন জঙ্গি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা। কলকাতায় ওই তিন জঙ্গি ফেরিওয়ালার কাজ করত বলে জানা গেছে। কিন্তু তা নামেই। কখনও ছাতা, কখনও মশারি বিক্রি করত। এরাজ্যে এই দুটি কাজের সঙ্গে যুক্ত লোকজনের বড় অংশই মুসলিম। এলাকার লোকজনের বিশ্বাস অর্জন করতেই এমন পেশা বেছে নিয়েছিল তারা, মনে করছেন গোয়েন্দারা। সেই সাজানো পেশার আড়ালেই সংগঠনের যাবতীয় কাজ চলত। এখন দেখার এনআইএ-র তদন্তে আর কী বিশেষ তথ্য উঠে আসে।