দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ত্রিপুরার জনজাতিদের অন্যতম প্রধান খাদ্য বাঁশ কোড়ল। নানান পুষ্টিগুণে ভরপুর সেই বাঁশ কোড়লকেই খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ অন্যতম হাতিয়ার করতে চাইছে ত্রিপুরা সরকার। শুক্রবার বিকেলে আগরতলার নব মহাকরণে এ ব্যাপারেই সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
আপাতত বাঁশ কোড়ল পেস্ট করে বিস্কুট প্রস্তুত হচ্ছে। সেই বিস্কুটের প্যাকেজিংকে আকর্ষণীয় করে তুলতেও ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ। এদিন বিপ্লব দেব বলেন, “বাঁশ কোড়লের বিস্কুটকে বাজারজাত করার ক্ষেত্রে প্যাকেজিংয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশ ও ত্রিপুরার জনজাতি মানুষের অন্যতম ঐতিহ্য রিশা। বাঁশের তৈরি শিশিতে রাখা থাকবে বাঁশ কোড়লের বিস্কুট। আর তার আবরণ থাকবে রিশার।”
কেন বাঁশ কোড়ল শরীরের জন্য উপকারী তারও ব্যাখ্যা দেন বিপ্লব। তাঁর কথায়, “মাল্টি ভিটামিনস, মিনারেলসে পরিপূর্ণ বাঁশ কোড়ল স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত উপযোগী। এই খাদ্য ক্যানসার ও ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা নেয়। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইভার থাকায় হজমেও সুবিধা হয়।”
পরবর্তী সময়ে বাঁশের কন্টেনারে মধুও বাজারজাত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, যুব সমাজ যদি এ বিষয়ে উদ্যোগী হয় তাহলে কর্মসংস্থানের একটা বড় জায়গা তৈরি হবে। একই সঙ্গে জনজাতিদের প্রধান খাদ্য পৌঁছে যাবে সারা দেশ ও বিশ্বে।
এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে একেবারে ঘরোয়া মেজাজে ছিলেন বিপ্লব। একদা জিম ট্রেনার নিজেই বললেন, “আমি ছোট বেলায় বাঁশ কোড়ল খুব একটা খেতাম না। কিন্তু এখন রোজই বাঁশ কোড়লের কোনও না কোনও পদ খাই!” দু’চারটে বিস্কুট চেখেও দেখেন বিপ্লববাবু।
এদিন ছিল আন্তর্জাতিক বাঁশ দিবস। সেই উপলক্ষেই বাঁশ কোড়লের বিস্কুট বাজারজাত করার সরকারি কর্মসূচির সূচনা করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। মূলত মূলি বাঁশের গোড়ায় যে শাঁস হয় সেটাকেই ত্রিপুরার জনজাতিভুক্ত মানুষ প্রধান খাদ্য হিসেবে খান।
তবে এই কর্মসূচি নিয়ে টিপ্পনি কাটতে ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিএমের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, “এই সরকারের আমলে ত্রিপুরার মানুষের কাছে রোজই বাঁশ দিবস। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী কখন কী বলেন নিজেই জানেন না। এর আগে বলেছিলেন, শিল্প-কারখানা হওয়ার চেয়ে পশুপালন করলে দ্রুত আর্থিক মুনাফা করা যায়! আজকে বাঁশের গল্প শোনালেন!”