বনগাঁর বিশ্বজিতের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী জ্যোতিপ্রিয়

0
1288

দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ অমিত শাহ সভা শেষ করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অন্তর্কলহ, আর তাতে জেরবার ঠাকুর নগর । ‘‌অসম্মান নিয়ে রাজনীতি করতে পারছি না’‌। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভায় ঢুকতে না পারার ক্ষোভ নিয়ে কার্যত ঘুরিয়ে বিজেপি ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য বিজেপিরই সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। বিশ্বজিতের অভিযোগ, নিজের স্বার্থে দলকে ব্ল্যাকমেল করছেন শান্তনু। দিন কয়েক আগেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বজিৎ। 

শাহের সভা নিয়ে মতুয়া অন্দরমহলে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছে তৃণমূল কংগ্রেসের একটা বড় অংশ। এমনকি ঠাকুরবাড়ির বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করতে গিয়ে রীতিমতো বিব্রত। যা তাঁর বৃহস্পতিবার রাতের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে স্পষ্ট বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। 

পাল্টা বিজেপি রাজ্য নেতাদের দাবি, ঠকুরনগর অমিত শাহের সভায় ঢুকতে পারেননি বিশ্বজিৎ। ভোটে টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রেও নতুন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মতের অমিল হচ্ছে তাঁর। সেই ক্ষোভ উগরে দিতেই  এদিন  সংবাদ মাধ্যমেল মুখ খুলেছেন। এদিন বিশ্বজিৎ বলেন, ‘‌প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব। এভাবে থাকা যায় না’‌। 

তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, ‘‌মতুয়াদের পরিচয়পঞ্জি দেওয়া নিয়ে মিথ্যে বলছে বিজেপি’‌।

তিনি আরও জানান, ‘‌দিন কয়েকের মধ্যেই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসছে’‌। প্রসঙ্গত, বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ২৫ মিনিট বৈঠক করেছিলেন বিশ্বজিৎ এবং নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং। যদিও পরে দুজনেই জানান, বিজেপি ছাড়বেন না তাঁরা। তবে বিশ্বজিতকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ঘাসফুল শিবির।বিশ্বজিৎ আগামী ২০ তারিখের মধ্যেই দলে ফিরে আসবে বলে দাবি জ্যোতিপ্রিয়র।

সেদিন ঠাকুরনগরে একটি সভা হবে, যেখানে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। শনিবার সকালে ‘দেশের সময় ‘কে বিশ্বজিৎ দাস জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় বাবু তাঁর নিজের মতো করে ভেবে তারিখ বসিয়ে এসব বলেছেন, আমি এখনও কিছু ভাবিনি৷ তবে সংবাদ মাধ্যম কে দ্রুত জানাব আমার অবস্থান।


 বনগাঁ উত্তরের বিধায়ককে দলে ফিরিয়ে নিয়ে ভোটের আগেই মতুয়া ভোটে অ্যাডভান্টেজ  নিতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল।

বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, বনগাঁয় এক প্রকার একাধিপত্য কায়েম করতে চাইছেন শান্তনু ঠাকুর। বিশ্বজিৎকে বনগাঁ উত্তরের প্রার্থী করা নিয়ে তাঁর আপত্তি রয়েছে। শান্তনু চাইছেন, বনগাঁ লোকসভার আওতায় সাতটি বিধানসভা আসনে তাঁর পছন্দের প্রার্থীরা টিকিট পান। তবে রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, দুলাল বর, বিশ্বজিৎ দাসরা অনেক আগে দল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন। তাঁদের নিজ নিজ আসনে প্রার্থী করার ব্যাপারে তখন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তার খেলাফ করলে ভুল বার্তা যেতে পারে।


কয়েকদিন আগে এই বিশ্বজিত্‍ই বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রাণাম করেছিলেন। সেদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন, “কীরে বিশ্বজিত্‍, ডিশিসন নিলি?” নোয়াপাড়ার বিধায়ক তথা বিজেপিতে যোগ দেওয়া সুনীল সিংও ছিলেন বিশ্বজিতের সঙ্গে। পরে দুজন মমতার সঙ্গে একান্তে বৈঠকও করেন।

সেদিনই জল্পনা তৈরি হয়েছিল তাহলে কি বিশ্বজিতের ঘর ওয়াপসি হচ্ছে? যদিও সন্ধ্যায় দেখা যায় হেস্টিংসে বিজেপি দফতরে গিয়েছেন বিশ্বজিত্‍, সুনীল। কারণ, ততক্ষণে ফোনে যোগাযোগ করে দুজনকেই বোঝানোর পালা চলে বলে খবর। কিন্তু এদিন বিশ্বজিতের সাংবাদিক বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দেওয়ায় নতুন করে জল্পনা উস্কে গিয়েছে। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, শান্তনুর ব্যাপারে দলের কাছে বার্তা দিতেই এদিন মুখ খুললেন তিনি ।

Previous articleমমতার ‘মা’ কিচেন চালু হচ্ছে সোমবার থেকে
Next articleতৃণমূলে দমবন্ধ, বিজেপির আইসিইউতে ভর্তি হয়েছে, দীনেশকে কটাক্ষ করে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ ৫০ বছর বাংলার মাটিতে তৃণমূল থাকবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here