ফিরহাদ- সুব্রতদের জামিন স্থগিত করল হাইকোর্ট, বুধবারে শুনানির আগে ঠাঁই প্রেসিডেন্সি জেলে

0
809

দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ নারদ মামলায় সোমবার বিকেলে নিম্ন আদালত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ববি হাকিম, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়দের অন্তর্বতী জামিন মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু রাতে সেই নির্দেশের উপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।

নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এবং গোটা দিনের ঘটনাক্রম বর্ণনা করে সোমবার রাতেই কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দালের আদালতে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। সেই মামলার রায়ে হাইকোর্ট জানিয়েছে, নিম্ন আদালতের রায়কে স্থগিত রাখা হল। আগামী বুধবার মামলার শুনানি হবে।

এক কথায় এ হল নাটকীয় মোড়। এবং আপাতত বুধবার পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ববি হাকিম সহ চার জনকে।

সূত্রের খবর, আপাতত দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক ও এক নেতা সহ নারদ মামলায় চার অভিযুক্তকে প্রেসিডেন্সি সেলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। সেখানে এক ওয়ার্ডে তাদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে ববি ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। এভাবে দিন শেষ হতে পট পরিবর্তনে ফের ক্ষুব্ধ তৃণমূল। এক তরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের আইনজীবী অনিন্দ্য রাউত।

সোমবার সকালেই নারদ মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। চার হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করে সিবিআই৷ সোমবার সকালে প্রথমে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআই গোয়েন্দারা। বাড়ির বাইরে মোতায়েন করা হয় প্রচুর সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরপরই তাঁকে বাইরে নিয়ে আসা হয়। তিনি নিজে জানান, নারদা কাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয় বিধায়ক মদন মিত্র, প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। নিয়ে আসা হয় রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। চারজনকে গ্রেফতার করে সিবিআই।

এরপর করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে তাঁদের ভার্চুয়াল শুনানি শুরু হয়। তাঁদের ১৪ দিনের জেল হেফাজত চেয়ে আবেদন জানায় আদালতে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, এই চারজন অত্যন্ত প্রভাবশালী। ফলে সাক্ষ্যপ্রমান লুঠ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু, তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। প্রায় আড়াই ঘণ্টা রায়দান স্থগিত রাখার পর শেষ পর্যন্ত জামিন পান চার হেভিওয়েট।

অন্যদিকে, গ্রেফতারির খবর পেয়ে নিজাম প্যালেসে পৌঁছন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেতা মন্ত্রীদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ৬ ঘণ্টা সেখানে ঠায় বসেও থাকেন তিনি। শুনানি শেষ হতেই রায়দানের আগেই বেরিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী বিধায়কদের গ্রেফতারির খবর পেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মী সমর্থকেরা।

তৃণমূল কর্মীদের ক্ষোভে রণক্ষেত্র নিজাম প্যালেস ও রাজভবনের ভবন চত্বর। জেলায় জেলায় ক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে। কলকাতার বিভিন্ন মোড়ে শুরু হয় অবরোধ। এমনকি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে লক্ষ্য করে নিজাম প্যালেসচত্বরে ইট-পাথর ছোড়ারও অভিযোগ ওঠে। দিনভর টানটান ঘটনাক্রমের পর অবশেষে সন্ধেয় আদালতে অন্তবর্তী জামিন পান চার হেভিওয়েট নেতা। কিন্তু ফের কলকাতা হাইকোর্টের শুনানি শেষে মামলায় এল রোমাঞ্চকর মোড়।

Previous articleমানুষের মৃত্যুর থেকেও বাংলা দখল বিজেপি-র কাছে জরুরি:জামিন পেয়েই সরব ফিরহাদ
Next articleমদন বললেন,’আমরা খারাপ, শুভেন্দু-মুকুল ভালো’!অন্যদিকে তখন ফিরহাদের চোখে জল কেন?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here