দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঠিক চার বছর আগে আজকের দিনেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন নোটবাতিলের ঘোষণা করেছিলেন। জানিয়েছিলেন, সেইদিন মধ্যরাত থেকে ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকার নোট বাতিল হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে দাবি করেছিলেন, এর ফলে দেশের কালো টাকাও উদ্ধার হবে। বন্ধ হবে সন্ত্রাসবাদ। বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রীর সেই প্রয়াসে সামিল হয়েছিল গোটা দেশ। ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যুও হয়েছিল অনেকের।
আজ সেই নোটবন্দির ৪ বছর হল। কিন্তু বিরোধী-সহ অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, নোটবাতিলের সিদ্ধান্ত ছিল একেবারেই ভুল। ভারতীয় বেহাল অর্থনীতির জন্যে সেই নোটবন্দিকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু চার বছরের মাথায় নিজের সিদ্ধান্ত আবার নিজেই সওয়াল করলেন নরেন্দ্র মোদী। বললেন, ‘নোট বাতিল সিদ্ধান্ত ছিল ভারতের জন্য আশীর্বাদ।’
উল্লেখ্য,২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর আচমকা প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ‘রাত ১২টার পর বাতিল হচ্ছে পাঁচশো ও হাজারের সব নোট। পরিবর্তে বাজারে আসবে পাঁচশো ও দু’হাজার টাকার নতুন নোট।’ এদিনও নিজের পদক্ষেপের প্রশংসা নিজেই করলেন মোদী। টুইটারে কিছু তথ্য দিয়ে লেখেন, ‘নোট–বাতিলের ফলে বাজার থেকে কালো টাকা নিকেশ করা গেছে। লোকে এখন সময়মতো কর জমা দেয়। দেশের তো উন্নতিই হয়েছে।’ জানান, কর–জালিয়াতির সঙ্গে যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদের সহজে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়ে তোলার পেছনে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত বড় ভূমিকা নিয়েছে। কর–জিডিপির অনুপাত উর্ধ্বমুখী হয়েছে। প্রচুর জাল নোট উদ্ধার হয়েছে এবং নতুন নোটে বাজারে আসায় জালিয়াতি বন্ধ হয়েছে। এছাড়াও সন্ত্রাসবাদীদের লেনদেন কড়া নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে।
মোদীর দাবি, নোট বাতিলের ফলে অর্থনীতিতে কালো টাকা যেমন কমেছে, একইসঙ্গে বেড়েছে কর আদায়। পাশাপাশি দেশে আর্থিক লেনদেনেও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক বেশি। সার্বিকভাবে নোট বাতিলের ফলে দেশে উন্নয়নে গতি এসেছে। তবে, শুধু মোদীর দাবিই নয়, একই দাবি করেছে তাঁর দল বিজেপিও।
বিজেপির দাবি, ২০১৬-১৭ সালে ইউপিআইয়ের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছিল ৬৯৫২ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে তা বেড়ে হয়েছে ২১ লাখ কোটি টাকা। প্রসঙ্গ তুলে আনা হয়েছে কর্পোরেট ট্যাক্সের বিষয়টিও। ট্যুইটে বিজেপির দাবি, ২০১৩-১৪ সালে যে পরিমাণ কর্পোরেট ট্যাক্স আদায় হয়েছিল, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে সেই আদায় বেড়েছে ৩৫%। এমনকী আয়করের ক্ষেত্রেও দেখা দিয়েছে আশাব্যঞ্জক ছবি। ২০১৬-১৭ সালে আয়কর রিটার্নের সংখ্যা ছিল ৮.০৩ লাখ। নোটবাতিলের ফলে মাত্র ১ বছরের মধ্যে, ২০১৭-১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৯.৪২ লাখ।
नोटबंदी PM की सोची समझी चाल थी ताकि आम जनता के पैसे से ‘मोदी-मित्र’ पूँजीपतियों का लाखों करोड़ रुपय क़र्ज़ माफ़ किया जा सके।
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) November 8, 2020
ग़लतफ़हमी में मत रहिए- ग़लती हुई नहीं, जानबूझकर की गयी थी।
इस राष्ट्रीय त्रासदी के चार साल पर आप भी अपनी आवाज़ बुलंद कीजिए। #SpeakUpAgainstDeMoDisaster pic.twitter.com/WIcAqXWBqA
যদিও নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপিকে নোটবন্দির চার বছর নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি রাহুল গান্ধী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দির সিদ্ধান্তকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। টুইটে রাহুল লিখেছেন, ‘নোটবন্দি হল প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল যাতে সাধারণ মানুষের কোটি কোটি টাকা ‘মোদী-মিত্র’ পুঁজিপতিদের হাতে চলে যায়।
এটা কোনও ভুল নয়, এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ আওয়াজ জোরাল করুন।’ উল্লেখ্য, নোটবন্দির তিন বছরের সময়ও রাহুল বলেছিলেন, ‘তিন বছর হয়ে গেল নোটবন্দি সন্ত্রাস হামলার, যা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটিয়েছে, কয়েক লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসা মুছে দিয়েছে এবং কোটি কোটি ভারতবাসীকে কর্মহীন করেছে।’