দেশের সময় ওয়েব ডেস্কঃ হলদিয়ার ঝিকুরখালি এলাকার জোড়া খুনের ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, জীবন্ত অবস্থাতেই পুড়িয়ে দেওয়া হয় মা ও মেয়েকে। পুলিশ জানিয়েছে, বেশ কয়েক দিন ধরে তদন্ত চলার পরে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানা গেছে মৃতদের পরিচয়।
রবিবার পুলিশের তরফ থেকে এক প্রেস মিট করে হলদিয়ার পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় জানান, জোড়া খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ শেখ মনজুর বলে একজনকে আটক করেছিল প্রথমে।
পুলিশের জেরায় মনজুর সব স্বীকার করে। পুলিশ জানতে পারে, এই ঘটনার সঙ্গে আরও তিন জন জড়িত। তাদের মধ্যে মূল অভিযুক্ত শেখ সাদ্দাম হুসেনকেও আটক করে পুলিশ। দু’জনেরই বাড়ি হলদিয়া এলাকায়। আজ তাদের হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সূত্রের খবর, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য সব রকম চেষ্টা করে এরা। শুধু তাই নয়, সাদ্দাম নিজের হাত কেটে হলদিয়ার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তিও হয় বলে খবর। বাকি দু’জন এখনও অধরা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হলদিয়ার সাত নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুড়খালি এলাকায় দু’জনকে আগুনে দাউদাউ করে পুড়তে দেখে আতঙ্কে শিউরে উঠেছিল এলাকার বাসিন্দারা। জল ঢেলে আগুন নেভানোর পরে দুটি দেহাংশ, পোশাকের কিছু অংশ এবং মাথার চুলের বেঁচে যাওয়া টুকরো দেখে পুলিশ অনুমান করেছিল, দগ্ধ দু’জনেই মহিলা। তাঁদের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় পুলিশ। এর পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই মৃত মহিলার পোশাক ও চুলের বর্ণনা দিয়ে পরিচয় খোঁজার চেষ্টা করা হয় জেলা পুলিশের তরফ থেকে।
আর এতেই সাড়া মেলে। মাত্র কয়েক দিনের চেষ্টাতেই জট খোলে রহস্যের। পুলিশ জানতে পারে মৃত দুই মহিলা নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রিয়া দে (২২) ও তাঁর মা রমা দে (৪০)। হলদিয়ার ঠিকাদার শেখ সাদ্দাম হুসেনের সঙ্গে প্রনয়ের সম্পর্ক ছিল রিয়ার। সাদ্দামই পরিকল্পনা করে মা ও মেয়েকে ডেকে এনেছিল হলদিয়ায়। তার পরে সাদ্দাম ও তার সঙ্গীরা মিলে মা ও মেয়েকে জ্যান্ত পুড়িয়ে দিয়েছিল। তেমনটাই বলছে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট।
তবে মা ও মেয়ে নিউ ব্যারাকপুর থেকে কবে এবং কী কারনে হলদিয়ায় এলেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। কীভাবেই বা তাঁদের ঝিকুরখালি নিয়ে যাওয়া হল, পোড়ানোর আগে কোনওরকম অত্যাচার করা হয়েছিল কিনা, কেনই বা তাঁদের চিৎকার কারও কানে পৌঁছয়নি, তা এখনও পরিষ্কার নয় পুলিশের কাছে।