দেশের সময়ওয়েবডেস্কঃ অবশেষে নন্দীগ্রাম মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। সরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি কৌশিক চন্দ মুখ্যমন্ত্রীকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও দিতে বললেন। রাজ্য বার কাউন্সিলে ওই অর্থ জমা রাখার কথা বলা হয়েছে।
কেন জরিমানা করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর? আদালত সূত্রের খবর, শাসকদলের তরফে ডেরেক ও ব্রায়েন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচারপতি কৌশিক চন্দের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের ছবি পোস্ট করেছিলেন। টুইট করেছিলেন মহুয়া মৈত্রও। এছাড়াও কৌশিক চন্দের বিরুদ্ধে আদালতের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন আইনজীবীরা। এসবের ভিত্তিতেই জরিমানা করা হয়েছে।
নন্দীগ্রামের ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মামলার ভার ছিল বিচারপতি কৌশিক চন্দের উপর। বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সেখানে হেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁকে নিয়ে নানা বিতর্ক তৈরি হয়। শাসকদলের তরফে অভিযোগ ওঠে বিচারপতি বিজেপি ঘনিষ্ঠ। এমনকি বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর ছবিও প্রকাশ্যে আসে। প্রথম থেকেই বিচারপতির সরে দাঁড়ানোর দাবি তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভার্চুয়াল শুনানিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি তাঁকে বলেছিলেন, ‘আপনি বিজেপি ঘনিষ্ঠ’।
উল্লেখ্য,গত ২৪ জুন আবেদনের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আর্জি জানান, বিচারপতি চন্দের নিজেরই এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত৷ যদিও বিচারপতি চন্দ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির কাছে জানতে চান, মামনার নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থাকলে কেন তা আরও আগে জানানো হয়নি৷ তিনি আরও প্রশ্ন করেন, ‘শুনানি সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই কেন আপনাদের মনে হচ্ছে যে সুবিচার পাবেন না? এটা কোন ধরনের শিষ্টাচার?
এদিন মামলা থেকে সরে যাওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জরিমানা করেন কৌশিক চন্দ। তিনি বলেন, বিচারপতি সর্বদা নিরপেক্ষ থাকেন। পেশার তাগিদেই তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হয়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে তাঁর বিরুদ্ধে এমন পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে। এই মামলার বিচার করা তাঁর সাংবিধানিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে বলেও জানিয়েছেন কৌশিক চন্দ।
কিন্তু মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোই শ্রেয় মনে করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ইতিমধ্যে বহু সুবিধাবাদী মানুষ এ ব্যাপারে কথা বলতে শুরু করেছেন। আমি যদি মামলা না ছাড়ি তাঁরা এই বিতর্ক জিইয়ে রাখবেন। মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এটা হতে দেওয়া যায় না। তাই আমি মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।