এরই মধ্যে একদিন দেবশ্রী রায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বাড়িতে গিয়েও মিডিনয়া থাকায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন।দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যে তিনি একটা প্যারালাল যোগাযোগ রেখে চলেছেন তা পরিষ্কার।আর এই সূত্রেই যে প্রশ্নটা সামনে আসছে তা হল তবে কি বৈশাখীর আপত্তিকে গুরুত্ব দিতে রাজি হচ্ছে না বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব?এমনিতে বৈশাখীর আপত্তি নিয়ে বিজেপির খুব একটা মাখা ব্যথা নেই,যেহেতু বিষয়টির সঙ্গে শোভন জড়িত তাই বিজেপি একটু দ্বিধায় আছে।
তবে দেবশ্রী রায়ের মত একজন নামি সেলিব্রিটিকে যেভাবে বৈশাখীর আপত্তিতে দলে নেওয়া যাচ্ছে না তাকে কেন্দ্র করে কলহ শুরু হয়ে গেছে বিজেপির অন্দরে।অন্তত সূত্রের কবর তেমনই।বিজেপি রাজ্য নেতাদের কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কবে এমন বড় নেত্রী হলেন যে তিনি বিজেপি কাকে দলে নেবে বা নেবে না তা ঠিক করে দেবেন।
কেন বৈশাখীর এই অদ্ভুদ আব্দার দিল্লির নেতারা মেনে নিলেন তা নিয়েও রাজ্য নেতাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।কেউ কেউ এমনটাও বলছেন নিজেদের ব্যক্তিগত অনিহাকে কোন যুক্তিতে দলের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন বৈশাখীদেবী?আর রাজ্য বিজেপির একাংশের এই প্রতিক্রিয়াকে কেন্দ্র করেই শুরু হতে যাচ্ছে বিজেপির অন্দর কলহ।
তবে শোভন চট্টোপাধ্যায় যে ভাবে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা অনুযায়ী কাজ করছেন তাতে তাঁকে দিয়ে বিজেপি কতটা সুবিধা করতে পারবে তা নিয়ে বিজেপির অন্দরে প্রস্ন উঠতে শুরু করেছে।বিজেপির রাজ্য নেতাদের একটা বড় অংশই মনে করছেন,শোভনদের অন্যায় আব্দার না মেনে প্রথম থেকেই কড়া হতে পারলে বিষয়টা আয়ত্তের বাইরে যেত না।
শোভন বৈশাখীকেও বুঝিয়ে দেওয়া যেত ব্যক্তিগত পছ্ন্দ-অপছন্দকে পার্টির উপরে যায়গা দেওয়া যাবে না।এটা নিয়েই বিজেপির রাজ্য় নেতাদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।
এটা যে তাঁর কথা নয়,কথাটা যে তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের,এটা বিজেপির সবাই জানে,তাই বৈশাখীকে বাদ দিয়েই শোভনকে বোঝাবার চেষ্টা শুরু হয়েছে।বিজেপির রাজ্য নেতাদের কেউ কেউ এটাও বলছেন,এখন বিজেপি ছেড়ে গেলে শোভনের একুল-ওকুল দুই যাবে।অতটা ঝুঁকি উনি নিতে পারবেন না,তাই শোভনকে যে কোন ভাবেই বিজেপিতে থাকতে হবে।তবে সেক্ষেত্রে বৈশাখীর ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়বে শোভনকী তাঁর বান্ধবীকে একা ছাড়তে পারবেন?
সব মিলিয়ে বৈশীখী ঝড় এবার বিজেপি শিবিরে আঁচড়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।দেবশ্রী রায়কে নিয়ে বিজেপি রাজ্য নেতাদের মধ্যে যেমন আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেছে তাতে বিজেপির মধ্যেও যে নানা দ্বন্দ্ব ও সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা বেশ টের পাওয়া যাচ্ছে।তবে সব কথার শেষ কথা একটাই দেবশ্রী রায়কে বিজেপি বৈশাখীর চেয়ে বেশী গুরুত্ব দিতে চাইছে,আর তাকে কেন্দ্র করেই আর একবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে চলেছে রাজ্যের একদা মন্ত্রী ও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যত।