চীনে আসন্ন বিশ্ব স্কুল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলার চার কন্যাশ্রী তনয়া

0
21
সুব্রত বক্সী, দেশের সময়

কলকাতা : ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্পোর্টস ফেডারেশন (আইএসএসএফ) -এর পরিচালনায় অনূর্ধ্ব ১৫ বছর বয়সের বালিকাদের ওয়ার্ল্ড স্কুল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চীনের শাংলুও-তে অনুষ্ঠিত হবে। ১৪ জনের ভারতীয় স্কুল ভলিবল দলের প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলার চার কন্যাশ্রী। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অভিষিক্তা পাল( নবম শ্রেণীর ছাত্রী ) , দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার শারণ্যা ঘোষ,( সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ) , হুগলি জেলার রূপকথা ঘোষ( সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী) ও সহেলী সামন্ত ( অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী )।

গত বছর জাতীয় স্কুল গেমসে অনূর্ধ্ব ১৪ বছর ভলিবল প্রতিযোগিতায় বাংলা দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ঐ দলের ৬ জন খেলোয়াড়কে এই ওয়ার্ল্ড স্কুল ভলিবল প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত করা হয়। এই চার কন্যাশ্রী ছাড়াও প্রাথমিক পর্বের এই ভারতীয় ভলিবল দলে উত্তর ২৪ পরগনার আদ্রিকা দাস ও হুগলির পূজা রাজবংশীও ছিল।

২৪ শে অক্টোবর থেকে ২রা ডিসেম্বর পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে ভারতীয় জাতীয় ভলিবল দলের আবাসিক শিবির থেকে চূড়ান্ত ১৪ জনের দল নির্বাচন করা হয়। এই ১৪ জনের ভারতীয় ভলিবল দলের বাংলার চার কন্যাশ্রী-ই সংখ্যাগরিষ্ঠ।


২০১৭ সালে খেল সম্মাননা অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ঘোষণা করেছিলেন খেলাটাকে বিদ্যালয় স্তরে নিয়ে যেতে হবে। এটার জন্য পাঁচ বছর সময় লাগবে। এই পাঁচ বছরে বিদ্যালয় স্তরে খেলাধুলার ক্ষেত্রে অনেকটাই বাংলা এগিয়েছে । খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা অনেকটাই প্রসারিত হয়েছে – তবে বিচ্ছিন্ন ভাবেতবুও জাতীয় স্কুল গেমসের ৱ্যাঙ্কিং-এ বাংলা সপ্তম স্থানে উঠে এসেছে। বর্তমানে ভলিবল,টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন, যোগাসন ইত্যাদি ক্ষেত্রে এগিয়ে বাংলা ।


সহেলী সামন্ত হুগলি জেলার কৃষক পরিবারের সন্তান,
রূপকথা ঘোষের বাবা হুগলি জেলার একটা ছোট বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী,উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অভিষিক্তা পালের বাবা একটি কাঁসা পিতলের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার শারণ্যা ঘোষের বাবা জীবন বীমার এজেন্ট হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এই কন্যাশ্রীদের কেউ-ই সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায়নি। এদের বাবা মায়ের দারিদ্রতা সত্বেও ফুটবলে সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের খেলোয়াড়দের মত এরা কেউ চাকরির দাবি করেনি। শুধু চেয়েছে খেলাধুলার সাথে সাথে পড়াশোনাটাকেও সমানতালে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সহায়তা। এদের সকলকেই প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত ঘন্টা ভলিবলের কঠোর অনুশীলন করতে হয়। ইন্ডিয়া ক্যাম্পে থাকার জন্য বই পড়ার সুযোগটা তারা পায়নি বললেই চলে।

বর্তমান আন্তর্জাতিক শিক্ষাধারার সামুদায়িক বিকাশের দৃষ্টিভঙ্গিকে মান্যতা দিয়ে উদীয়মান ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যানে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যালয় ক্রীড়া নীতি অবিলম্বে লাগু করা প্রয়োজন।


CBSE- র মতো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প পরীক্ষার সংস্থান রাখা উচিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করবার জন্য। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের জন্য CBSE-র মতো পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে বিকল্প পরীক্ষার ব্যবস্থা না-থাকার জন্য অস্ট্রেলিয়া সফর ও মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের জন্য বিশ্বকাপ জয়ী একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মহিলা

খেলোয়াড় রিচা ঘোষের পক্ষেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি! অংকে নম্বর তোলার স্বীকৃতি যদি রিপোর্ট কার্ডে থাকে তাহলে বিশ্ব ক্রিকেটের পিচে রিচার রান তোলার স্বীকৃতি বা ভলিবলে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার, তথা ভারত জয়ী কন্যাশ্রীদের স্বীকৃতি কেন তাদের বিদ্যালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের রিপোর্ট কার্ডে থাকবে না?

বাংলার খেলাধুলার সার্বিক উন্নয়নে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পূর্বের ঘোষণাকে মান্যতা দিয়ে শারীর শিক্ষা বিষয়টিকে পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখবার জন্য বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের স্কুল স্পোর্টস পলিসি তাড়াতাড়ি বাস্তবায়িত হলে তার সুফল বাংলার খেলোয়াড়রা পাবে বলে মনে করেন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা।

Previous articleতিন দিনের জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মঙ্গলেই পৌঁছলেন মুর্শিদাবাদে
Next articleএবার ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি থাকবে না যাবে?বুধেই রায় দেবে হাইকোর্ট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here