দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ রিলায়েন্স জিওর ই-কমার্স পোর্টাল কাজ শুরু করে দিল। লকডাউনের মধ্যে যে স্বপ্ন দেখানো শুরু হয়েছিল, লকডাউনের মধ্যেই সেই স্বপ্ন সফল করল মুকেশ আম্বানির সংস্থা। ইতিমধ্যেই গ্রাহকদের থেকে পণ্যের অর্ডার নেওয়াও শুরু করে দিয়েছে। কোন কোন পণ্য মিলছে তা দেখা যাচ্ছে jiomart.com ওয়েবসাইটে। শুরুতেই যে সব এলাকায় পরিষেবা মিলছে সেখানকার ক্রেতাদের জন্য এসে গেল এক মহা সুযোগ। এখন একটা হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর কাছে থাকা মানেই দূর হয়ে যাবে বাজার করার সব চিন্তা। ওয়েবাসইটে দেখা যাচ্ছে পণ্যের তালিকা ও দাম।
শুরুতে জেনে নেওয়া ভাল, জিওমার্ট ঠিক কেমন পরিষেবা দেবে। তারও আগে জানা দরকার কী লক্ষ্য নিয়ে তৈরি হল রিলায়েন্সের এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। কিছুদিন আগেই রিল্যায়ান্সের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে মার্ক জুকারবার্গের ফেসবুক। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের জিও প্ল্যাটফর্ম এবং ফেসবুক ও তার অধীনস্থ মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ—এই বাঁধনেই এক উন্নত ডিজিটাল ভারত গড়ার ডাক দেওয়া হয়।
ভারতে এখন মোটামুটি ৪০ কোটি মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। এই বিপুল সংখ্যক হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীরা এক বড় বাজার। আর সেই বাজারটাই ধরতে চায় রিলায়েন্স। সংস্থারও একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর রয়েছে। ৮৮৫০০ ০৮০০০ এই নম্বরটিই মোবাইল ফোনে সেভ করতে বলছে জিও। গ্রাহকদের বিশেষ কিছুই করতে হবে না। শুধু ‘হাই’ লিখে ওই নম্বরে পাঠালেই চলবে। এর পরে দিতে হবে পিনকোড। এবার সেই পিনকোড এলাকায় যদি পরিষেবা চালু হয়ে তাকে তবে গ্রাহকদের হোয়াটসঅ্যাপে আসবে একটি লিঙ্ক। সেই লিঙ্কের ভ্যালিডিটি ৩০ মিনিট। এই সময়ের মধ্যেই লিঙ্কটি ব্যবহার করতে হবে। লিঙ্কে ক্লিক করলে একটা নতুন ওয়েবপেজ খুলবে। সেখানে গ্রাহককে নাম, ঠিকানা এবং ফোন নম্বর দিতে হবে। সঙ্গে বিভিন্ন সামগ্রীর ক্যাটালগ। সেখানে দামও উল্লেখ করা থাকবে। প্রয়োজনীয় সামগ্রী সিলেক্ট করে অর্ডার দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে এই পরিষেবায় শুধু ক্রেতারাই উপকৃত হবেন না, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবেন। গ্রাহকের অর্ডার দেওয়া হয়ে গেলে এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত দোকানে চলে যাবে নির্দেশ। সেটা জিওমার্ট স্টোর হতে পারে আবার স্থানীয় পাড়ার দোকানও হতে পারে। কোন খানে অর্ডার গেল সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে গ্রাহককে। সামগ্রী ডেলিভারির জন্য তৈরি হয়ে গেলে গ্রাহকের কাছে ফের আসবে মেসেজ। এবার গিয়ে সংগ্রহ করে নিতে হবে নির্দিষ্ট দোকান বা স্টোর থেকে। শর্ত সাপেক্ষে হোম ডেলিভারির সুযোগও থাকবে।
ভারতে মুদির দোকান, ছোট ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বা হকারদের অনলাইনে কেনাবেচা করার কোনও প্লাটফর্ম এতদিন ছিল না। লকডাউনে তাই এই ধরনের ব্যবসায়ীরা অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এবার জিওমার্ট সেই অভাব পূরণ করতে চলেছে। এই পরিষেবা ছোট ব্যবসায়ীদের রোজগারের নতুন রাস্তা খুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
জিওমার্ট থেকে মুদি দোকানের সামগ্রী তো বটেই সেই সঙ্গে আরও অনেক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা যাবে। ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে, গৃহস্থালী প্রয়োজনের সমস্ত কিছু কেনাকাটা করার সুবিধা মিলবে। তাজা ফলমূল, শাকসবজি, চাল, ডাল, তেল, প্যাকেটজাত খাবার, দুগ্ধজাত দ্রব্য সবই মিলবে। এমনকি বাড়িতে পোষা পশুর খাবার, বাড়ি পরিষ্কার থেকে পার্সোনাল কেয়ারের সামগ্রী সবই মিলবে জিওমার্টের ভার্চুয়াল স্টোরে। শুরুতে বাছাই সামগ্রীর এমআরপি-র উপরে ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে বলেও ওয়েবসাইটে জানানো হয়েছে। আরও একটা উল্লেখযোগ্য দিক হল, সংস্থা দাবি করেছে, তালিকাভুক্ত একাধিক পণ্য সরাসরি নিবন্ধিত কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে। যে কোনও কৃষক বা দোকানদার যাঁরা ছোট ব্যবসা করেন তাঁরাও জিওমার্ট মারফত অনলাইনে তাদের পণ্য বিক্রয় করতে পারবেন।
এই পরিষেবা কিছুদিন আগেই চালু হয়। তখন শুধু মহারাষ্ট্রের মুম্বই, থানে এবং কল্যাণে মিলছিল সুবিধা। এখন দিল্লি, নয়ডা, কলকাতাতেও মিলছে পরিষেবা। তবে আপনার এলাকায় চালু হয়েছে কিনা তা জানতে এখনই আপনাকে সংস্থার হোয়টসঅ্যাপ নম্বর সেভ করে পিনকোড পাঠাতে হবে। তার পরের কাজটা একেবারেই সহজ।