দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃআমেরিকায় ভোটের চূড়ান্ত ফল ঘোষণা নিয়ে বৃহস্পতিবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভ ও সেনেটে আলোচনা চলছিল। এমন সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকরা হামলা চালায় ক্যাপিটল হিলে। তাদের থামাতে পুলিশ গুলি চালালে চারজন নিহত হয়। তার কয়েক ঘণ্টা পরেই ট্রাম্প স্বীকার করলেন, জো বিডেনই জয়ী হয়েছেন।
এদিন ক্যাপিটল হিলে বিরাট হর্ষধ্বনির মধ্যে ঘোষণা করা হয়, বাইডেন ৩০৬-২৩২ ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। এর ফলে ট্রাম্প বা তাঁর সমর্থকরা আর বাইডেনের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন না। ক্যাপিটল হিলে ঘোষণার পরে ট্রাম্প বিবৃতি দিয়ে বলেন, তিনি চান আইনসম্মত পথে ক্ষমতার হস্তান্তর হোক। সেই সঙ্গে জানিয়ে দেন, রাজনীতি থেকে সরছেন না। একটি মহলের ধারণা, ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট ভোটে ট্রাম্প ফের দাঁড়াতে চান।
ট্রাম্প বিবৃতিতে বলেছেন, “আমি নির্বাচনের ফলাফলের সঙ্গে একমত নই। যাই হোক, ২০ জানুয়ারি আইনি পথে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে।” পরে তিনি বলেন, “আমি বরাবরই বলেছি, কেবলমাত্র বৈধ ভোটগুলিই যেন গোনা হয়। আমেরিকা যাতে আগের মতোই গ্রেট হয়ে ওঠে, সেজন্য আমাদের লড়াই সবে শুরু হল।”
এদিন ক্যাপিটল হিলে হামলার তীব্র নিন্দা করেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামা। তিনি বলেন, আজকের দিনটিকে ইতিহাস যথাযথভাবেই মনে রাখবে। এই হিংসার পিছনে আছেন একজন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্পকে দোষ দিয়ে ওবামা বলেছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট আইনসম্মত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে ক্রমাগত মিথ্যা বলে চলেছেন। তিনি যে কাজ করেছেন, তাতে অসম্মানিত হয়েছে পুরো আমেরিকা। কিন্তু ট্রাম্প আচমকা কিছু করেননি।
ওবামার মতে, বেশ কিছুদিন ধরে এই হিংসার প্রস্তুতি চলছিল। তিনি বলেছেন, “দু’মাস ধরে একটি রাজনৈতিক দল ও তার অনুগত মিডিয়া তাদের সমর্থক ও দর্শকদের সত্যি কথাটা জানায়নি। সত্যি কথাটা হল এই যে, বাইডেন মোটেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ট্রাম্পকে পরাজিত করেননি।” এরপরে ওবামা সরাসরি মিথ্যা খবর প্রচারের জন্য রিপাবলিকান পার্টি ও তার সমর্থক মিডিয়াকে দায়ী করেছেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাল্পনিক খবর প্রচার করা হয়েছে। নাগরিকদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভে ইন্ধন দিয়ে তাঁদের একাংশকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে হিংসার পথে।
রিপাবলিকান পার্টির নেতাদের উদ্দেশে ওবামা বলেছেন, “গণতন্ত্রের কক্ষটি কলঙ্কিত হয়েছে। রিপাবলিকান নেতারা যে পথে চলছেন, আগামী দিনে সেই পথেই চলতে পারেন। এইভাবে হিংসায় উস্কানি দিতে পারেন। অথবা তাঁরা স্বীকার করে নিতে পারেন বাস্তবকে। হিংসার আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে পারেন। এককথায় তাঁরা আমেরিকার স্বার্থে কাজ করতে পারেন।”