প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো: নতুনদিল্লি, ২৮ মার্চ, ২০২০:
কোভিড-১৯ মোকাবিলায় রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোভিন্দ এবং উপরাষ্ট্রপতি শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে শুক্রবার বিভিন্ন রাজ্যর রাজ্যপাল ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপরাজ্যপাল ও প্রশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন ।
বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি আশাপ্রকাশ করেন, সমাজের সবথেকে দুর্বলতর শ্রেণীর মানুষদের౼বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক ও নিঃস্ব মানুষদের দুর্দশা লাঘব করতে ভারতীয় সমাজের ‘ভাগ করে নেওয়া ও যত্ন করা’র মানসিকতা এবং সরকারের উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে।
এই ভিডিও কনফারেন্সে ১৪ জন রাজ্যপাল ও দিল্লির উপরাজ্যপালকে বেছে নেওয়া হয় যেহেতু তাঁদের অঞ্চলগুলি এই মহামারীতে সবথেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
আলোচনায় লকডাউন অর্থাৎ প্রতিরোধমূলক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চলার সময় উদ্ভূত সমস্যার সমাধানের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে সুশীল সমাজ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির ভূমিকা নিয়ে কথা হয়েছে।
মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী ভগত সিং কোশিয়ারী তাঁর রাজ্যে এই মহামারী মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা জানান। কেরালার রাজ্যপাল শ্রী আরিফ মহম্মদ খান জানান, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে সরকার , স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, চিকিৎসা পরিসেবায় যুক্ত ও পুলিশ কিভাবে একযোগে জনসাধারণকে বোঝাচ্ছে। তিনি আরো জানান, কোয়ারান্টাইনে থাকা মানুষদের যদি মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা হয়, তাহলে ৩৭৫ জন মনস্তত্ত্ববিদ সেই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন। কেরালার এই পদক্ষেপ অন্য রাজ্যগুলিও বিবেচনা করতে পারে।
কর্ণাটকের রাজ্যপাল শ্রী বাজুভাই বালা জানালেন, এই রোগের সম্পর্কে জনসচেতনতার জন্য প্রায় ৮০০০ রেড ক্রশ স্বেচ্ছাসেবী কাজ করে চলেছেন। অক্ষয় পাত্র নামে সামাজিক সংগঠনটি রাজ্য জুড়ে খাবারের প্যাকেট বিলি করছে।
হরিয়ানার রাজ্যপাল শ্রী সত্যদেও নারায়ন আর্য্য জানান, এই ভাইরাসের সংক্রমণে বিষয়ে সবধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় তাঁর রাজ্য প্রস্তুত। দিল্লির উপরাজ্যপাল শ্রী অনিল বাইজল জানান, পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে তিনি এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী প্রতিদিন বৈঠকে বসছেন।
গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী আচার্য দেব ব্রত জানান, রাজ্যে কোয়ারান্টাইনের ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে।
তেলেঙ্গনার রাজ্যপাল ডঃ তামিলিসাই সৌন্দরারাজন জানান, রাজ ভবনের কাছে থাকা ৮০০টি দরিদ্র পরিবারকে প্রতিদিন খাবার দেওয়া হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল শ্রী জগদীপ ধনখড় জানান, প্রয়োজন হলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়াও রেড ক্রশ তাদের সীমিত সামর্থে এই ভয়াবহ অসুখের বিপদ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে চলেছে।
হিমাচল প্রদেশের রাজ্যপাল জানান, রাজ্যে জনজাতি অধ্যুষিত জেলাগুলিতে সচেতনতা গড়ে তুলতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বিহারের রাজ্যপাল শ্রী ফাগু চৌহান বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় রাজ্যে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি।
তামিলনাডুর রাজ্যপাল শ্রী বনোয়ারীলাল পুরোহিত জানান, রাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকদের চাল,ডাল দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আম্মা ক্যান্টিন থেকে ভর্তুকিযুক্ত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী লালজি ট্যান্ডন জানান, দিনমজুরদের খাবার দেওয়ার জন্য রাজ্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
পাঞ্জাবের রাজ্যপাল এবং চন্ডীগড়ের প্রশাসক শ্রী ভি পি সিং বাদনোরে জানান, চন্ডীগড়ে রেড ক্রশ খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করছে। রাজস্থানের রাজ্যপাল শ্রী কলরাজ মিশ্র জানিয়েছেন, সে রাজ্যে একটি তহবিল গড়া হয়েছে, যেখানে এই সমস্যার মোকাবিলায় সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি অনুদান দিচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ রাজ্যপালদের কাছে প্রস্তাব দেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিনিয়ত আলোচনা করতে। করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় এই অভিজ্ঞতাগুলির মধ্যে সেরা অভিজ্ঞতা যেন দেশের অন্য প্রান্তে প্রয়োগ করা যায়, সেই পরামর্শও তিনি দেন।