দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ হাজার পেরিয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মারণ ভাইরাসে সংক্রামিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৯০ জনের। কিন্ত এখনও দেশের একমাত্র করোনাহীন রাজ্য সিকিম। বাংলা লাগোয়া উত্তর-পূর্বের এই পাহাড় ঘেরা রাজ্যটিতে কী ভাবে সম্ভব হল সংক্রমণ ঢুকতে না’ দেওয়া? এনডিটিভি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং জানিয়েছেন ঠিক কবে থেকে কী কী পদক্ষেপ করা শুরু করেছিল তাঁর সরকার।
ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল ৩০ জানুয়ারি। চিনের উহান থেকে ফেরা কেরলের এক ছাত্র কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছিলেন। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওইদিন থেকেই সিকিমে শুরু হয়েছিল সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।
ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই শুরু হয় অ্যাকটিভ স্ক্রিনিং। ৫ মার্চ বিদেশি পর্যটকদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে সিকিম সরকার। ১৭ মার্চ দেশীয় পর্যটকদেরও ঢোকা বন্ধ করে দেয় পর্যটনের উপর নির্ভরশীল রাজ্যটি। সিল করে দেওয়া হয় রাজ্যের সমস্ত সীমানা।
সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী ওই সাক্ষাৎকারে আরও জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৬ লক্ষ মানুষের অ্যাকটিভ স্ক্রিনিং হয়েছে। ৮০ জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছিল। তাঁদের প্রত্যেকেরই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
গতকাল বাংলার মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, পুলিশ বা প্রশাসন দিয়ে লকডাউন করানো যায় না। এর জন্য প্রয়োজন আত্মশৃঙ্খলা। সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজ্যের মানুষের শৃঙ্খলাবোধের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তার কথায়, “আমাদের রাজ্যের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরলস পরিশ্রম আর সাধারণ মানুষের শৃঙ্খলাবোধই এখনও সংক্রমণ রুখে রাখতে পেরেছে।”
গতকাল থেকে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সিকিমেও সেই নির্দেশিকা মেনে শুরু হয়েছে কাজ। টেমি চা বাগান-সহ রাজ্যের মোট ১৯টি চা-বাগানে পাতা তোলার কাজ শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, সিকিম সরকার আপাতত পরবর্তী ধাপের পরিকল্পনা করছে।
পর্যটনই ভরসা সিকিমের অর্থনীতির। কিন্তু সেই শিল্প এখন কার্যত লাটে উঠেছে। তবে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী সেসব নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন। বরং তিনি জানিয়েছেন, মানুষের জীবন থাকলে তবে তো পর্যটন! মানুষকে বাঁচানোই এখন একমাত্র কাজ। সেটা করতে পারলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাকিটাও স্বাভাবিক হবে।