কীভাবে ভ্যাকসিনের বন্টন হবে তা নিয়ে এবার মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী

0
1284

দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিশ্বজুড়ে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। বিশেষ করে ভারতে দিন দিন সব রেকর্ড ভেঙে যাচ্ছে। এই অবস্থায় চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাসের হাত থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় হল ভ্যাকসিন। আর এই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে গোটা দুনিয়া জুড়ে। সব দেশই নিজের মতো করে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাচ্ছে। ভারতেও বেশ কিছু ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে। আগামী বছরের শুরুতেই প্রথম ভ্যাকসিন দেশে চলে আসবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন। কিন্তু কীভাবে সেই ভ্যাকসিনের বন্টন হবে তা নিয়ে এবার মুখ খুললেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বললেন, কারা আগে ভ্যাকসিন পাবে তা অক্টোবরের মধ্যেই চূড়ান্ত করছে সরকার।

রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের জবাবে ডক্টর হর্ষ বর্ধন বলেন, “সরকার দিন রাত কাজ করছে যাতে ভ্যাকসিন চলে এলে সুষ্ঠু ও সমানভাবে সবার মধ্যে তা বন্টন করা যায়। অক্টোবরের মধ্যেই তালিকা তৈরি হয়ে যাবে যে কারা আগে ভ্যাকসিন পাবে। যে বয়সের মানুষদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তার তালিকাও তৈরি হচ্ছে। এর জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রক রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে মিলে কাজ করছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক এই মুহূর্তে একটি ফরম্যাট তৈরি করছে যেখানে রাজ্যগুলি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জনসংখ্যার তালিকা জমা দিতে পারে।”

এই ভ্যাকসিন দেওয়ার ক্ষেত্রে কারা অগ্রাধিকার পাবে তার একটা মোটামুটি রূপরেখাও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সাধারণত স্বাস্থ্যকর্মী, ৬৫ বছরের বেশি বয়স্ক মানুষ ও যাঁদের শারীরিক অবস্থা খারাপ তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া দেওয়া হবে। তবে তার জন্য একটা রূপরেখা তৈরি হবে। আর সেই রূপরেখা অক্টোবরের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অবশ্য বিদেশ থেকে কোনও ভ্যাকসিন এলে আগে তা আইসিএমআর ভাল করে খতিয়ে দেখবে বলেই জানিয়েছেন ডক্টর হর্ষ বর্ধন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা হিসেব করে দেখেছি প্রথমে ৪০ থেকে ৫০ কোটি ডোজ অন্তত ২০ থেকে ২৫ কোটি মানুষের শরীরে দেওয়া হবে। ২০২১ সালের জুলাই মাসের মধ্যে এই কাজ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। অবশ্য এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল এখনও বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে।”

কিছুদিন আগে সেরাম ইন্সটিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালা কেন্দ্রকে প্রশ্ন করেছিলেন, করোনার ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে গেলে তা কিনতে ৮০ হাজার কোটি টাকা লাগবে। সেই টাকা কেন্দ্রের কাছে আছে তো? এই প্রশ্নের জবাবে হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, “ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাঙ্ক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে কেন্দ্র। 

সরকার এই কাজের জন্য কোনও ফিনান্সিয়াল এজেন্সির কাছে থেকে পাওয়া টাকার উপর নির্ভর করছে না। দেশের প্রতিটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া সরকারের অগ্রাধিকার। আর সেই কাজের মাঝে কোনও কিছু বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।”

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ভারতের যেসব কোম্পানি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল করছে তাদের সবরকমের সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত কেন্দ্র। তবে এই বিষয়ে কোনও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি তিনি।

কোভিড ভ্যাকসিন চলে আসার পর তার যাতে কোনও ভাবেই কালোবাজারি না হয় তার জন্যও কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডক্টর হর্ষ বর্ধন। তিনি বলেন, “সবকিছুও পরিকল্পনা মাফিক হবে। ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়েছে। সবার মধ্যে যাতে ভ্যাকসিন ঠিকভাবে পোঁছে দেওয়া যায় সেটা সরকারের কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই কাজের জন্য একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক, নীতি আয়োগ ও ন্যাশনাল টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি গ্রুপের আধিকারিকরা রয়েছেন। তাঁরাই এই ভ্যাকসিনের সাপ্লাইয়ের দিকে খেয়াল রাখবেন।”

Previous articleমা ইলিশ রক্ষায় ২৪৬ কোটির প্রকল্প বাংলাদেশে
Next articleঅনলাইনে ক্লাসে বাধা, হরিয়ানার গ্রামে মোবাইল টাওয়ার বসালেন সোনু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here