জাতির উদ্দেশে ভাষণ প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া:
দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃরবিবার দেশজুড়ে জনতা কার্ফুর ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গোটা বিশ্ব একটা সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। একটা ভাইরাস গোটা মানবজাতিকে সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
বিশ্বযুদ্ধের সময়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। গোটা দেশবাসী আতঙ্কে রয়েছে। করোনা থেকে নিশ্চিন্ত হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তাই সজাগ থাকতে হবে। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে যা চেয়েছি তা পেয়েছি। নিরাশ হতে হয়নি। আমি কিছু চাইতে এসেছি। আমি কয়েক সপ্তাহ, কিছু সময় চাইছি। কারণ এখনও করোনার ভ্যাকসিন বের হয়নি। তাই আজ দেশের নাগরিকদের কাছে সমর্থন চাইছি জনতা কার্ফু পালন করার জন্য। জনতার দ্বারা তৈরি করা কার্ফু।
২২ মার্চ রবিবার সকাল সাতটা থেকে রাত ৯টা জনতা কার্ফু পালন করা হবে। কেউ বাড়ি থেকে বেরোবেন না। একজন নাগরিক হিসাবে আমাদের এটা পালন করার সংকল্প নিতে হবে। রাজ্য সরকারগুলির কাছে আহ্বান করব জনতা কার্ফু করার নেতৃত্ব দেবেন।’
তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে জানান, ভারত সরকার এই পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। কিছু দেশ এমনও আছে যারা পদক্ষেপ করেছে। আইসোলেশনে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামলেছে। ভারতের মতো ১৩০ কোটি দেশ উন্নয়নের দিকে এগোচ্ছি। সেখানে এই ব্যাপক করোনা প্রভাব থেকে আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই।
এখানে দুটি পথ নিতে হবে। এক, সংকল্প। দুই, সংযম। দেশবাসীকে সংকল্প করতে হবে আমরা এই মহামারির মতো ভাইরাসকে রুখতে কেন্দ্র–রাজ্য সরকারের নির্দেশ পালন করব। নিজে বাঁচব এবং অন্যকে বাঁচাবো এই সংকল্প নিতে হবে। নিজেদেরকে সুস্থ থাকতে হবে।
আর সংযম নিয়ে জানান, ভিড় থেকে এড়িয়ে যেতে হবে। বাড়ি থেকে বেরোনো না। সংকল্প এবং সংযমের মাধ্যমে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এই কথাগুলি না মানলে নিজের পরিবারকে ক্ষতির দিকে ঠেলে দেবেন। প্রবীণ নাগরিকরা ৬০–৬৫ বছরের মানুষজন বাড়ি থেকে বেরোবেন না।
ছোটবেলায় যুদ্ধের সময় ব্ল্যাকআউট করা হতো। তাই আজ দেশের নাগরিকদের কাছে সমর্থন চাইছি জনতা কার্ফুর জন্য। যা জনতার দ্বারা তৈরি কার্ফু। ২২ মার্চ রবিবার সাতটা থেকে রাত ৯টা জনতা কার্ফু চালু করা হবে। কেউ বাড়ি থেকে বেরোবেন না। একজন নাগরিক হিসাবে আমাদের এই প্রয়াস পালন করার সংকল্প নিতে হবে। রাজ্য সরকারগুলির কাছে আহ্বান করব জনতা কার্ফু করার নেতৃত্ব দেবেন।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে রবিবার পর্যন্ত জনতা কার্ফুর বিষয়টি প্রচার করতে হবে। বলতে হবে, বোঝাতে হবে সবাইকে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই উদ্যোগের প্রয়োজন। এছাড়া পরিষেবা যাঁরা দেন তাঁদের সামান্য ভাবা যাবে না। তাঁদের সংক্রমিত হবার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি থাকে।
রবিবার তাঁদের ধন্যবাদ দিতে হবে। ঠিক বিকেল পাঁচটায় ৫ মিনিট পর্যন্ত এমন মানুষদেরকে তালি দিয়ে, ঘন্টা ধ্বনি দিয়ে অভিনন্দন জানাবো। সাইরেনের আওয়াজের মাধ্যমে এই কর্মসূচী পালন করা হবে। কারণ সেবা পরম ধর্ম।
তিনি জানান, কিছুদিনের মধ্যেই দেশের অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোভিড–১৯ টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। তারা সিদ্ধান্ত নেবে আর্থিকভাবে কতটা সাহায্য করা যায়। মানবিকতার সঙ্গে বিষয়টি দেখে বেতন কাটবেন না যাঁরা আপনাদের সেবা করে থাকে। এমনকী দুধ, খাবার, ওয়ুধ যাতে কম না হয় তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সংরক্ষণ না করে যেমন চলছিল তেমন চালান। দেশবাসী নিজের নিজের কর্তব্য পালন করবেন বলে আমি আশা রাখি। তাহলেই মানবজাতি তথা ভারত জয়ী হতে পারবে।